অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির মামলা বাতিল করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
ড. ইউনূসসহ সাতজনের করা আপিল মঞ্জুর করে বুধবার (২৩ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপির বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন।
রায়ের পর দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূসসহ অন্যদের করা আপিল মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। অধ্যাপক ইউনূসসহ অন্যদের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন, তা বাতিল করা হয়েছে। ফলে অধ্যাপক ইউনূসসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা মামলাটি বাতিল হলো।’
মামলার কার্যধারা বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূসসহ অন্যদের করা আপিলের ওপর গত ১৯ মার্চ শুনানি শেষ হয়। সেদিন আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ২৩ এপ্রিল তারিখ ধার্য করেন। আজ রায়ে আদালত বলেন, ‘আপিল ইজ অ্যালাউড।’
আদালতে আপিলকারীদের পক্ষ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আসিফ হাসান শুনানিতে ছিলেন।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অধ্যাপক ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়।
মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলাটির কার্যধারা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে অধ্যাপক ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তৎকালীন শীর্ষ ছয় কর্মকর্তা গত বছরের ৮ জুলাই আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত ২৪ জুলাই হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে আদেশ দেন।
অন্য ছয় আবেদনকারী হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক আশরাফুল হাসান, নাজনীন সুলতানা, শাহজাহান, নূরজাহান বেগম (বর্তমানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা) ও এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন অধ্যাপক ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এদিকে এরই মধ্যে রাষ্ট্র বা দুদকের পক্ষে পিপি মামলাটি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। গত বছরের ১১ আগস্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক।
লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে গত বছরের ২১ অক্টোবর আপিল বিভাগ আদেশ দেন। পাশাপাশি কনসাইজ স্টেটমেন্ট (আপিলের সারসংক্ষেপ) জমা দিতে সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় আপিলের ওপর শুনানি হয়।
আপিলকারীদের আইনজীবীর ভাষ্য, মামলাটি শুনানির জন্য বিচারিক আদালতে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর তারিখ ধার্য থাকা অবস্থায় এর আগেই তাদের (আপিলকারীদের) না জানিয়ে গত বছরের ১১ আগস্ট মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়, যাতে আইনের লঙ্ঘন হয়েছে।
এর আগে দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ৩০ মে মামলাটি করেছিলেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।
আমারবাঙলা/এমআরইউ