সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রাইজুল (৭৪) গ্রেপ্তারের পর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।
রিয়াজুল ইসলামের মৃত্যুর তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার ভাতিজা আবু বক্কর। তিনি জানান, বুধবার রাত ১০টা ২০ মিনিটের সময় রিয়াজুল ইসলামের মৃত্যু হয়। লাশ হাসপাতালে পুলিশের জিম্মায় আছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি, হৃদ্রোগ, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছিলেন।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী জানান, থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা একটি মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে রিয়াজুল ইসলামকে গত ৩০ মার্চ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আদালতে হাজির করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আর কোনো খবর জানেন না বলেন জানান তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রিয়াজুল ইসলাম উপজেলার বীরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। দীর্ঘদিন বেলজিয়ামে ছিলেন। তার তিন ছেলে ও দুই মেয়ের সবাই যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। গত ইউপি নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
ভাতিজা আবু বক্কর জানান, তার চাচার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। কারো সঙ্গে তার কোনো বিরোধও ছিল না। তিনি বাড়িতেই থাকতেন। ঈদের আগের দিন ইফতারের মিনিট দশেক আগে তাকে বাড়ি থেকে পুলিশ নিয়ে যায়।
আবু বক্কর জানান, তখনো রিয়াজুল অসুস্থ ছিলেন। তিনি ২২টি ওষুধ সেবন করেন। পুলিশকে সব দেখিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। পুলিশ তাকে আদালতে পাঠানের কাগজেও (চালান) এসব অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেছে।
আবু বক্কর আরো জানান, ৪ এপ্রিল তারা জানতে পারেন, কারাগারে তিনি গুরুতর অসুস্থ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। ঈদের পরদিন ঘটনা হলেও কারাগার থেকে জানানো হয়েছে তিন দিন পর। এরপর অবস্থার অবনতি হলে কারাগার থেকে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল। মঙ্গলবার তার অস্ত্রোপচার হয়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আবু বক্কর বলেন, পুলিশ নিরপরাধ, অসুস্থ মানুষটাকে কোনো কারণ ছাড়াই গ্রেপ্তার করেছে। এরপর হাসপাতালে আমরা বারবার বলেছি, উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য, আমাদের সব সামর্থ্য আছে। কিন্তু আমাদের কথা কেউ শোনেনি।
আমারবাঙলা/এমআরইউ