উপরে রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকলেও ভেতরে ভেতরে ‘অদ্ভুত সখ্যতা’ গড়ে উঠেছে করিমগঞ্জ উপজেলা যুবদল নামধারী কয়েক নেতা ও যুবলীগের মধ্যে; এমন অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। জমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে টেন্ডার বাণিজ্য; সবই হচ্ছে দুই দলের একটি অংশের ‘মিলেমিশে’ অংশগ্রহণে। আর এসব কর্মকাণ্ডে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন বিএনপি দলের নাম ভাঙ্গানো কয়েক নেতা।
সম্প্রতি করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের উত্তর গণেশপুর খেয়াঘাট ইজারার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া এক লিখিত অভিযোগে উঠে এসেছে এই চিত্র।
অভিযোগকারী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ দাবি করেন, ৭ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ শহরে প্রশিক্ষণে থাকা অবস্থায় তাকে ডেকে নিয়ে খেয়াঘাট ইজারার একটি রেজুলেশনে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করানো হয়। তার ভাষায়, “একটি ভবনের ঘরে দরজা-জানালা বন্ধ করে আমাকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়।”
এই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে রয়েছেন করিমগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন আলম, উপজেলা যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান এবং যুবলীগ কর্মী মো. ফারুক। অভিযোগে বলা হয়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন ভূইয়া নিজে ফোনে চাপ প্রয়োগ করেন, এবং এর আগেও তোফায়েলকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
তোফায়েল আহমেদ জানান, ইউনিয়ন টেন্ডার কমিটির নিয়ম অনুযায়ী সভা ডাকার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান একতরফাভাবে রেজুলেশন তৈরি করে সদস্যদের কাছ থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। নিয়ম না মেনে এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার জানান, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং অভিযোগ যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন ভূইয়ার বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
করিমগঞ্জের স্থানীয় রাজনীতিতে যুব সংগঠনগুলোর একাংশের এই পারস্পরিক সমঝোতা এবং জোরপূর্বক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ প্রশাসনের ভূমিকা ও দলীয় রাজনীতির দায় নিয়েও প্রশ্ন তুলছে স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।
আমারবাঙলা/ইউকে