নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের রবিবার (৯ মার্চ) দিনে আদালতে হাজির করতে পারেনি পুলিশ। পরিস্থিতি বিবেচনায়, রবিবার গভীর রাতে রিমান্ড আবেদনের শুনানি করেছেন আদালত।
মূল অভিযুক্ত ভুক্তভোগী শিশুর বোনের শ্বশুরকে সাত দিন, স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুর প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। মাগুরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মতিন এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্র ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার সকাল থেকে প্রায় দিনভর মাগুরা শহরে শিশু ধর্ষণে জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর সেখান থেকে সরে গিয়ে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ভায়না মোড় মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। সন্ধ্যার পর শহরে আবার মশাল মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। এমন পরিস্থিতিতে আসামিদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় তাদের আদালতে হাজির করতে পারেনি পুলিশ।
রবিবার রাত ১২টার পর শুরু হয় রিমান্ড শুনানি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি। আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিলে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন আসামিরা। রিমান্ড না দেওয়ারও দাবি করেন তারা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভুক্তভোগী শিশু অচেতন থাকায় জবানবন্দি নেওয়া যায়নি। ফলে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মামলার মূল অভিযুক্তকে সাত দিন এবং অন্য তিন আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রিমান্ডের আবেদনসহ অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি থাকলেও রবিবার দিনে আসামিদের আদালতে হাজির করার ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। দিনভর আন্দোলনকারীরা আদালতের ফটক ঘিরে রেখেছিলেন। আসামিদের তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করছিলেন। এ কারণে রাতে শুনানি করেছেন আদালত।’
মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। শিশুটি বর্তমানে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) চিকিৎসাধীন।
গত শনিবার শিশুটির মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। এতে শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বোনের স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুরকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আমারবাঙলা/এমআরইউ