চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে বসন্ত, ভ্যালেন্টাইন ডে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে ফুলের রাজধানী যশোরের গদখালীতে জমে উঠেছে ফুলের বাজার। দিবসগুলো সামনে রেখে বাড়তে শুরু করেছে ফুলের দাম। চাষিদের দাবি, সামনের দিনগুলোতে ফুলের দাম আরো বাড়বে এবং তারা লাভবান হতে পারবেন।
ভোর হতেই যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বাহারী সব ফুল নিয়ে বিক্রির জন্য দাঁড়িয়েছেন চাষিরা। হঠাৎ গরম পড়ায় ফুল ফুটে যাওয়া বাজারে ফুলের জোগানও বেশি। গ্লাডিওলাস, রজনিগন্ধা, জারবেরা, চন্দ্র মল্লিকা, গাঁদা ফুলের দাম কিছুটা কম হলেও উর্ধ্বমুখী গোলাপের দাম। মাত্র দুই দিন আগেও যে গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৫ টাকা দরে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সেই গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকা দরে।
চাষিদের দাবি, বসন্ত ও ভ্যালেন্টাইন ডেকে সামনে রেখে বাড়তে শুরু করেছে ফুলের দাম। সামনের দিনগুলোতে ফুলের দাম আরো বাড়বে এবং তারা লাভবান হতে পারবেন।
আব্দুল হালিম নামে এক চাষি বলেন, আমার এক বিঘা গোলাপের চাষ রয়েছে। চায়না গোলাপ ১২ টাকা ও দেশি গোলাপ আট টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সামনে ১৪ ফেব্রুয়ারি আছে, দাম আরো বাড়বে।
আব্দুল মান্নান নামে আরেক চাষি বলেন, দুই বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করেছি। আজ বাজারে এক হাজার ৬০০ ফুল এনেছি। যার এক ৩০০ ফুল আট টাকা দরে বিক্রি করেছি। এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে ফুলে একটু লসে আছি। তবে আশা করছি সামনের অনুষ্ঠানগুলোতে ভালো দাম পেলে লাভবান হতে পারব।
জালাল হোসেন নামে অপর এক চাষি বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ফুলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। জারবেড়া বিক্রি করেছি ছয় থেকে আট টাকা ও চন্দ্রমল্লিকা দুই তিন টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।
শাহিন আলম নামে আরেক চাষি বলেন, হঠাৎ গরম পড়ায় গ্লাডিওলাস, রজনিগন্ধা ফুল বেশি ফুটেছে। যে কারণে এসব ফুলের দাম কিছুটা কম। তবে গোলাপ ফুলের দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি আগে বাজার আরো ভালো হবে বলে আশা করছি।
মনজুর হোসেন নামে অপর এক চাষি বলেন, হঠাৎ গরম পড়ায় আমরা হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। তবে এখন শীত পড়ছে। আশা করছি গতবছরের তুলনায় এ বছর ফুলের দাম বেশি পাবো। ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে ফুলের দাম উঠতে শুরু করেছে। দ্বিতীয় সপ্তাহে এ দাম আরো বাড়বে। ফলে চাষিরা লাভবান হতে পারবে।
গদখালী ফুল চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর বলেন, জোগান বাড়লেও চাহিদা থাকায় ফুলের দাম পাচ্ছেন চাষিরা। এ দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে তিন দিবসে শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির যে লক্ষ্যমাত্রা তা অর্জিত হবে এবং অতিবৃষ্টির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন চাষিরা।
যশোরের গদখালী ও পানিসারা এলাকার প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে ১৩ ধরনের ফুলের চাষ হয়।
আমারবাঙলা/এমআরইউ