ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে। খবর পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সব মিলে আট শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের ব্যাংকপাড়া নতুন স্কুল রোডে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে ইফতি নামের এক যুবককে শহরের ব্যাংকপাড়া থেকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের পক্ষ মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড ক্যামেস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এসিসিই) বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সেলিম রেজা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মুয়াজ বিল্লাহ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইমরান, কৃষি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষা বর্ষের তাহমিদ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইয়াজদানী, আসাদুল্লাহ ও খালিদ। আহত একজনের নাম জানা যায়নি। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঁচজনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান বলেন, গতকাল রাত ৯টার দিকে ব্যাংকপাড়া নতুন স্কুল রোডে দেখেন, ১০–১৫ জন লোক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ-ছয় জন শিক্ষার্থীকে পেটাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা ভয়ে দৌড়াচ্ছেন। পরে জানতে পারেন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সেলিম রেজা টিউশনি করে গোপালগঞ্জ শহরের ব্যাংকপাড়ায় মেসে ফিরছিলেন। নতুন স্কুল রোডে পৌঁছালে ইফতি নামের এক যুবকসহ আর কয়েকজন সেলিম রেজার পথরোধ করেন।
তখন সেলিম রেজাকে তারা বলেন, ‘তুই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িস, তুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক। তোর সমন্বয়কগিরি দেখাচ্ছি।’ এই বলে তারা সেলিম রেজাকে মারধর শুরু করেন। মারধরের একপর্যায়ে সেলিম রেজা দৌড়ে তার মেসে গিয়ে বিষয়টি জানান। মেস থেকে তাহমিদ, মুয়াজ বিল্লাহ, ইমরান, ইয়াজদানী, আসাদুল্লাহ ও খালিদ বের হয়ে এলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়, তাদের মারধর করা হয়। এ সময় তিনি ফোন করে থানা–পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জ সদর থানায় এসে জড়ো হন। এ সময় তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য ও প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা থানায় এসে দোষীদের বিচারের আশ্বাস দিলে রাত ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা থানা ছেড়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
ফার্মেসি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহীন বলেন, গোপালগঞ্জে বারবার শিক্ষার্থীদের ওপর বিভিন্নভাবে হামলা করা হচ্ছে। তাঁরা এসব ঘটনার বিচার চান। যেসব সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে, তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার করতে হবে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত ইফতি নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে।
আমারবাঙলা/জিজি