ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ওমান প্রবাসী স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে মেরিনা আক্তার মিতু (১৯) নামের এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যার আগে শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ওই গৃহবধূর বাবার বসতবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে শশীভূষণ থানা পুলিশ রাত ৮টায় চরফ্যাশন হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে করে থানায় নিয়ে যান।
নিহত গৃহবধূ মিতু উপজেলার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. কামাল আখনের মেয়ে ও একই উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের বেল্লাল হোসেনের স্ত্রী।
গৃহবধূর মামী মুনিরা বেগম জানান, রসুলপুর ইউনিয়নের বাবুল বেপারীর ছেলে বেল্লাল হোসেনের সঙ্গে নয় মাস আগে মিতুর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের দুই মাস পর স্বামী বেল্লাল প্রবাসে চলে যান। এরপর থেকে মিতু কালো বলে তার শ্বশুর বাবুল বেপারীর পরিবারের সদস্যরা নানা সময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। পুত্রবধূ কালো তাই তারা প্রায় নগদ টাকা ও সাংসারিক জিনিসপত্রের জন্য মিতুর সঙ্গে ঝগড়াবিবাদ করতেন। প্রায় সময় শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদেরা মিতুকে মারধর করতেন। স্বামীর পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের শিকার হয়ে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে মিতু বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এসব বিষয় নিয়ে প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে তর্কবিতর্ক করে তিনি বসতঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস নেন।
গৃহবধূর ছোট বোন রিতু বেগম বলেন, বিকালে মা বাড়িতে ছিলেন না। অসুস্থ ফুফুকে দেখতে ফুফুর বাড়িতে যান। আমি এবং বড় বোন মিতু একাই ঘরে ছিলাম। বিকালে আপু দুলাভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। আমি ঘরে থাকায় তাদের ভিডিও কলে কথা বলতে অসুবিধা হওয়ায় আপু আমাকে পাশের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। অনেকক্ষণ পরে আমি ঘরে ফিরে বোনের কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে তার শোবার ঘরে যাই। এ সময় দেখি আড়ার সঙ্গে বোন মিতু ঝুলে আছেন। কল চলা অবস্থায় পাশে পড়ে ছিল তার মোবাইল ফোন। আমার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মিতুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার শ্বশুরসহ পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যান।
শশীভুষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক হাসান রাসেল জানান, হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ