সারাদেশ
দুশ্চিন্তায় কৃষক

ঘন কুয়াশায় পচন ধরছে আলু খেতে

নওগাঁ প্রতিনিধি

দেশের শস্যভান্ডারখ্যাত জেলা নওগাঁয় দিন যতই যাচ্ছে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। গত কয়েকদিন থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকছে চারপাশ। দিনে ঠিকমতো দেখা মিলছে না সূর্যের। ফলে চরম দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন জেলার আলু এবং বোরো ধান চাষিরা।

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘন কুয়াশার কারণে পচন ধরেছে আলুতে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বোরো বীজতলা। বোরো এবং আলু চাষ নিয়ে শঙ্কায় আছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। জেলায় গত কয়েকদিন যাবত তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে।

শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলার বদলগাছি আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যমতে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে জেলায় এ বছর ২১ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আলু এবং ৯ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলায় ৯০ শতাংশ আলু রোপণ করা হয়েছে।

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের কৃষক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে আলু পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দেড় বিঘা জমিতে আলু লাগাইতে এখন পর্যন্ত খরচ প্রায় ১০-১২ হাজার টাকার মতো হয়েছে। আলুতে পচন ধরায় চরম হতাশায় আছি।

জেলার সাপাহার উপজেলার শিরন্টি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের কৃষক আজগর আলী বলেন, তিন বিঘার মতো জমিতে আলু লাগিয়েছি। গত তিনি-চার দিনের ঘন কুয়াশার কারণে আলুতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আলুর পাতা পচে গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, স্থানীয় ভাষায় এটাকে আমরা মড়ক রোগ বলি।

আলু উঠতে এখনো অনেক দেরি, এভাবে ঘন কুয়াশা হতে থাকলে সব আলু পচে নষ্ট হয়ে যাবে। এমনিতেই আলুতে এবছর খরচ অনেক বেশি। আলুর বীজ আর শ্রমিক বাবদ এখন পর্যন্ত ৫৮-৬০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে। আলুতে পচন ধরায় চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি।

সাপাহার সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা নাঈম হোসেন বলেন, বাজারে আলুর চাহিদা বশি হওয়ায় এবারই প্রথম প্রায় তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। আলুর বিজের দাম অত্যধিক বেশি, এখন অবধি তিন বিঘা জমিতে খরচ প্রায় ৬০ হাজার টাকার মতো হয়েছে।

বীজবাবদ ৩০-৩২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে আবার গত কয়েকদিন যাবত ঘন কুয়াশায় চারপাশ অন্ধকার হয়ে থাকছে। এভাবে চলতে থাকলে চরম লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

নওগাঁ সদর উপজেলার বরুনকান্দি গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন বলেন, বোরো মৌসুমে ধান লাগানোর জন্য বিছন (ধানের বীজ) ফেলেছি। কয়েকদিনের ঘন কুয়াশার কারণে বিছন লাল হয়ে মরে যাচ্ছে। এরকম ঘন কুয়াশা চলতে থাকলে ধান হয়ত আর লাগানো যাবে না।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগাম আলু এবং আগাম বোরো বীজতলাগুলো ঘন কুয়াশার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বীজতলা এবং আলুর জমিতে কৃষককে আগাম সতর্কীকরণ হিসেবে প্রয়োজনীয় ছত্রাকনাশক এবং বোরো বীজতলায় বিকেল বেলা পানি দিয়ে সকাল বেলা পনি বের করে দেওয়া অথবা পলিথিন পেপার দিয়ে বীজতলা ঢেকে দেওয়ার জন্য নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কৃষকরা এই পরামর্শগুলো গ্রহণ করলে আশা করি আলু এবং বোরো বীজতলা ঘন কুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এই লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

আমার বাঙলা/এনবি

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ট্রান্সপোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিয়নের বিজয় দিবস উদযাপন

বাংলাদেশ ট্রান্সপোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিয়ন মহান বিজ...

ধূমপানে বুদ্ধি কমে, বলছে গবেষণা

ধূমপানে অনেক ক্ষতি। এতে করে ফুসফুস বা হৃদপিণ্ডের ক্ষতি হয়। ধূমপান মস্তিষ্কেও...

পালানোর পর প্রথমবার বিবৃতিতে যা বললেন আসাদ

বিদ্রোহীদের অভিযানের মুখে গত ৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে র...

সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির লটারি আজ, ফল দেখা যাবে যেভাবে

দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি...

ফিরল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ বেশকিছু বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অ...

সংস্কার একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া: আমির খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, স...

সরিষা চাষে ঝুঁকছেন বরেন্দ্র জনপদের চাষিরা

দেশে ঊর্ধ্বমুখী ভোজ্যতেলের বাজার। সম্প্রতি সয়াবিন...

লেবানন থেকে ফিরেছেন আরো ৯৪ বাংলাদেশি

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে দেশে ফিরেছেন আরো ৯৪ জন ব...

ইসরায়েল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে: খামেনি

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের সরকার পতনের ফলে তেহরানের ন...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা