বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য দাবিতে আশুলিয়ায় কর্মবিরতি পালন করেছেন বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের অন্তত ২০টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কিছু শ্রমিক সকালে কারখানায় এলেও কাজ বন্ধ রেখেছেন। আবার কিছু শ্রমিক কারখানা থেকে বেরিয়ে গেছেন।
বুধবার শ্রমিকদের অব্যাহত আন্দোলন ও কর্মবিরতির মুখে এসব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। শিল্প পুলিশ জানায়, শ্রমিকরা যদিও কোনো বিশৃঙ্খলা বা ঝামেলা করছেন না, তবে বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তারা কাজ বন্ধ রেখেছেন, কেউবা কারখানা থেকে বেরিয়ে গেছেন।
পোশাক শিল্প সূত্রে জানা গেছে, হামীম গ্রুপ, শারমীন গ্রুপ, মেডলার, নেক্সট কালেকশন, আল মুসলিম, সেতারা গ্রুপসহ বেশ কিছু শ্রমিকরা সকালে কারখানায় এলেও ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে কাজ বন্ধ রেখেছেন।
আরেকটি সূত্র জানায়, শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে নাসা ও ট্রাউজার লাইন শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় তাদের কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। ব্যান্ডো ডিজাইন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। হামীম ও নিট এশিয়ার শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেরিয়ে গেছেন। নিউ এইজ, ডেকো, আল মুসলিম, এথিকালসহ অন্যান্য কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে ফ্লোরে বসে আছেন।
এর আগে শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে মঙ্গলবারও আশুলিয়ার অন্তত ১০টি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পুলিশ ও শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাৎসরিক বেতন ১৫ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি অর্জিত ছুটির বকেয়া প্রতি মাসে পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন শ্রমিকরা। এসব দাবির পাশাপাশি নিম্নতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করারও দাবি জানান তারা।
শ্রমিক নেতারা জানান, শ্রমিকদের দাবির মুখে সরকার ১৫ শতাংশের জায়গায় ৯ শতাংশ বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরও কেন শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন, এটি আসলে তারাও বুঝতে পারছেন না। একবারে তো সবকিছু চাইলেই পাওয়া যায় না। মালিকদের বিষয়গুলোও ভাবতে হবে। তাই যে দাবি মানা হয়েছে, সেটি মেনে নিয়ে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মো. মমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, বার্ষিক ছুটির টাকা, বকেয়া বেতন পরিশোধ, বেতন বৃদ্ধিসহ কয়েকটি দাবিতে সকাল থেকে আশুলিয়ায় বেশ কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে ২০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ সময় শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে বাড়িতে চলে যাওয়ায় কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আমার বাঙলা/এনবি