সাতক্ষীরার মান্দারবাড়ির অভয়ারণ্যে চলছে মাছ ধরার রমরমা ব্যবসা। অভয়ারণ্য মাছ ধরার অপরাধে মান্দারবাড়ি থেকে ট্রলারসহ ৮ জেলেকে আটক করা হয়েছে। তবে জেলেদের অভিযোগ প্রতি ‘গোণে’ অভয়ারণ্যের ওসিকে টাকা দিলে অভয়ারণ্যে মাছ ধরার বৈধতা মেলে। অন্যথায় নানা জরিমানা ও মামলার শিকার হতে হয়।
অথচ মান্দারবাড়ি সম্পূর্ণটাই অভয়ারণ্য হওয়া সত্ত্বেও সেখানে মাছ ধরছেন কামরুল, বিপুল, হোসেনসহ একাধিক কোম্পানি। হোসেনের মাছের নৌকা রয়েছে ৮-১০টা থেকে ২৪টা, বিপুলের নৌকা ৪টা আর কামরুলের রয়েছে ১০ থেকে ১৫টা।
মান্দারবাড়ি অভয়ারণ্যে আগে মাছ ধরত এমন এক কোম্পানির মালিক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ওখানে ওসির থেকে বড় ক্ষমতাধর হচ্ছেন মহিউদ্দিন। মহিউদ্দিন আউটসোর্সিং কর্মচারী কিন্তু তার সুনজর থাকলেই অভয়ারণ্যে মাছ ধরা যায়। মহিউদ্দিন বর্তমানে স্টেশনে না থাকলেও মহিউদ্দিনের বাড়ি স্থানীয় এলাকায় হওয়ায় তার দাপট অনেক বেশি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, মান্দারবাড়ি অভয়ারণ্যে বিভিন্ন কোম্পানি মাছ ধরছে। আমাদের চরপাটা ও খাল পাঠানো নৌকায় প্রতি গোণে নৌকা প্রতি মান্দারবাড়ির ওসিকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দিতে হয়। এরমধ্যে লেনদেনের কোন প্রকার ঝামেলা হলেই ধরিয়ে দেওয়া হয় নৌকা। আবার বিনিময় ছাড়া কোন নৌকা অভয়ারণ্যে ঢুকলে সেসকল নৌকাকেও জরিমানা করা হয়-দেওয়া হয় মামলা।
অপর এক জেলে বলেন, আমরা অবৈধ কাজ করছি ঠিক আছে তাহলে কেন ঘুষ নিচ্ছেন-তাহলে তো আমরা বৈধ হয়েই কাজ করছি। হয় আমাদের সবাইকে বন্ধ করা হোক না হলে সবাইকেই অনুমতি দেওয়া হোক। মান্দারবাড়ির ওসি মোঃ শমসের আলী এ সকল টাকা নিজের হাতে নেন না, তার কালেকশন ম্যান রয়েছে রাজস্ব বিভাগের হাফিজ ও আউটসোর্সিং মহিউদ্দিন।
ওসি শমসের আলী বলেন, ‘আজ ৮জন জেলেসহ আমরা একটি ট্রলার আটক করেছি যাদেরকে মামলা দিয়ে কোর্টে সোপার্দ করা হয়েছে’। তবে এ সকল অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন আমি এ সকল বিষয়ে জড়িত নই। অভয়ারণ্যে কেউ মাছ ধরে না।
বুড়ি গোয়ালিনীর স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, আমি গত মাসের ২২ তারিখে এখানে যোগদান করেছি। আমি নিয়মিত অভয়ারণ্যগুলোতে টহল দিচ্ছি। এ ধরনের কোন সত্যতা আমি পাইনি, পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান বলেন, আমরা আটজন জেলেসহ একটি নৌকা আটক করেছি। তাদেরকে নিয়মিত মামলা দিয়ে কোর্টে প্রদান করা হয়েছে। অভয়ারণ্যে মাছ ধরার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রমাণ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আমার বাঙলা/এনবি