মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন মিলনায়তনে পালন করা হয়েছে সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস। ৭ ডিসেম্বর, গৌরবোজ্জ্বল সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে সাতক্ষীরার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠেছিল মুক্তিকামী জনতা।
১৯৭১ সালের ০২ মার্চ সাতক্ষীরা শহরে পাকিস্তানবিরোধী মিছিলে রাজাকাররা গুলি করলে শহীদ হন আব্দুর রাজ্জাক। এরপরই গর্জে উঠে রুখে দাঁড়ায় সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা। তারা যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে।
মুক্তিযুদ্ধের খরচ বহনের জন্য ব্যাংক থেকে টাকা ও অলংকার এবং অস্ত্র লুট করে শুরু করেন মুক্তিযুদ্ধ। অষ্টম ও নবম সেক্টরের অধীনে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ট্রেনিং শেষে ২৭ মে সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। এছাড়া টাউন শ্রীপুর, বৈকারী ও খানজিয়া সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন আব্দুর রাজ্জাক, কাজল, খোকন, নাজমুল, নূর মোহাম্মদসহ ৩৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে বিদ্যুতের আলো থেকে বিচ্ছিন্ন করতে ২৯ নভেম্বর টাইম বোমা দিয়ে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত পাওয়ার হাউস উড়িয়ে দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। রাতের আঁধারে বেড়ে যায় গুপ্ত হামলা। পিছু হটতে শুরু করে হানাদাররা।
৬ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে বাঁকাল, কদমতলা ও বিনেরপোতা ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে হানাদার বাহিনী সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়। ৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় দেবহাটা ও কলারোয়া। ৭ ডিসেম্বর জয়ের উন্মাদনায় জ্বলে ওঠে সাতক্ষীরার মুক্তিকামী জনতা।
শনিবার সকালে জেলা শহরের পোস্ট অফিসের মোড়স্থ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল। বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল করিমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন, সাবেক জেলা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন মশু, সাবেক জেলা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম শহিদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকার, এ্যাড. নুরুল আলম, তবিবর রহমান, মো. আলতাফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের জেলা সাধারণ সম্পাদক এস এম শরীফ উদ্দীন, কাজী মিঠু প্রমূখ।
আমার বাঙলা/এনবি