গজারিয়ায় স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে চার সন্তানের জননী আসমা আক্তার (৩৮) বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত আসমা গজারিয়া উপজেলা হোসেন্দী ইউনিয়নের রঘুরচর গ্রামের কালু ফকিরের ছেলে মাছ ব্যবসা মহসিন মিয়ার স্ত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (৪ডিসেম্বর) মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহতের সন্তান ও স্বজনরা জানায়, গত ২৮ নভেম্বর আসমা আক্তার তার স্বামীর বাড়িতে বিষ পান করে। নিহতের চাচাতো ভাই পিন্টু মোল্লা বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে পারিবারিকভাবে মহসিন ও আসমা আক্তারের বিয়ে হয়। সংসার জীবনে তাদের তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে মহসিন নেশায় আসক্ত হয়ে পড়লে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হতো। সর্বশেষ ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্ত্রী আসমাকে মারধর করে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় স্বামী। আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে গাঁয়ের আগুন নেভালেও এর কিছুক্ষণ পরে ধানের পোকা মারার কীটনাশক খেয়ে ছটফট করলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পরদিন শুক্রবার দুপুরে আসমা আক্তার কিছুটা সুস্থ বোধ করায় তিনি বাড়ি চলে যান। বাড়িতে যাওয়ার পর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে পুনরায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মাঝ রাতে মৃত্যুবরণ করেন আসমা।
পিন্টু মোল্লা আরও বলেন, বেশ কয়েকবার আমার বোনকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে তার স্বামী মহসিন। তার গায়ে আগুন লাগিয়ে তাকে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল সে। এ ঘটনায় তার গায়ের কিছু অংশ পুড়ে যায়। বাধ্য হয়ে আমার বোন আত্মহননের পথ বেছে নেয়। আমরা সঠিক বিচারের মাধ্যমে এই মহসিন এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে বিষয়টি আত্মহত্যা বলে মনে হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে। তবে নিহতের পক্ষ থেকে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
আমার বাঙলা/এনবি