আর কিছুদিন পরই হয়তো ঢাকায় জেঁকে বসবে শীত। তবে এর আগেই দেশের উত্তরাঞ্চল পঞ্চগড়ে দেখা দিয়েছে শীতের প্রবাহ।
হিমালয়কন্যা খ্যাত জেলা পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নেমেছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। উত্তরের এ জেলাটিতে পাহাড় থেকে প্রবাহিত হওয়া হিমেল বাতাস বাড়াচ্ছে শীতের প্রকোপ। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ভোর ৬টায় এ জেলায় ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ঢাকার আগামী চার দিনের তাপমাত্রায় দেখা যাচ্ছে মূলত রৌদ্রোজ্জ্বল থাকবে দিনগুলো। তারপর আসবে কিছুটা মেঘের ঘনঘটা। ধারণা করা হয়, এই বৃষ্টিময় আবহাওয়ার পরই হয়তো পূর্ণাঙ্গ শীত আসবে ঢাকায়।
বুধবার (২০ নভেম্বর) আবহাওয়া অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এই লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর হলে স্বাভাবিকভাবেই ঢাকায় কিছুটা বৃষ্টির প্রভাব দেখা যাবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে পঞ্চগড়ে ভোর থেকে দেখা গেছে হালকা কুয়াশা। সূর্য আলো ছড়ালেও শীতের পরশ দিনদিন বাড়ছে। অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এ জেলায় তাপমাত্রা কমে বেড়েছে শীতের মাত্রা।
ভোর থেকেই কর্মব্যস্ততায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষদের। দিনমজুর, পাথর ও চা শ্রমিক, ভ্যানচালকরা কাজে বের হয়েছেন সকাল সকাল। নবান্নের সময়ে ধানের খেতে ছুটছেন কৃষকরা। ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, অগ্রহায়ণ মাস পড়ে গেছে। এখন থেকেই এ জেলায় শীত বাড়তে থাকে। আগামী পৌষ-মাঘ মাস বেশি শীত পড়ে। এখন থেকেই সন্ধ্যার পরে ঠান্ডা লাগা শুরু করেছে। শরীরে শীতের কাপড় জড়াতে হচ্ছে। রাত বাড়তে থাকলে শীত আরো বাড়ে। রাতে কম্বল কিংবা কাঁথা নিতে হয়। তবে সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত আবহাওয়া বেশ গরম। বিশেষ করে উত্তরের এই জেলাটি বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার বিধৌত এলাকা হওয়ায় এখানে সবার আগে শীত নামে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ) পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে।
তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। ভোরে কুয়াশাও ভালো দেখা যাচ্ছে। বুধবার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১৫ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন দিন যত যাবে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।
ঢাকায় কবে শীত আসবে এ প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ শাহনাজ পারভিন জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ঢাকায় শীত পুরোপুরি জেঁকে বসতে পারে। এর আগ পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রা কমে আসার কারণে শীত অনুভূত হবে। ঢাকায় শীত নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে অনুভূত হতে শুরু করবে এবং ডিসেম্বরের শুরু থেকে তাপমাত্রা কমে মাঝামাঝি সময়ে পুরোপুরি জেঁকে বসতে পারে।
ছয় ঋতুর বাংলাদেশে শীত এক অন্যরকম অনুভূতি দেয়। যেমন আছে আনন্দ তেমন আছে বেদনা। প্রতি বছরই আমাদের দেশের দরিদ্র মানুষরা শীতে প্রচুর কষ্ট করেন। চট-ছালা গায়ে দিয়েই ওভারব্রিজ ফুটপাতে দিন যাপন করেন অনেকেই।
.আমার বাঙলা/এসএইচ