সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলামের নানা অনিয়ম, নিয়ম বর্হিভূত ও দুর্নীতির বিষয়ে জেলা জুড়ে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ ও দফায় দফায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ও দুদকের জালে দুর্নীতির তদন্তে প্রমান মিললেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আড়াল করতে কিছু সংবাদ কর্মীদের ভুল তথ্য দিয়ে একের পর এক দেখাচ্ছে নিত্যনতুন কারিশমা। তার নতুন নতুন কৌশল ও দুর্নীতি আড়াল করতে অধিনস্তদের শোকজ ও বদলি করা হয়েছে।
মৃত ব্যক্তির নামে স্বাক্ষর করে টাকা উত্তোলন, নিম্নমানের কাজ, টেন্ডার ও ঠিকাদার ছাড়া কাজ বাস্তবায়ন, ঠিকাদার সেঝে বিল উত্তোলনের চেষ্টাসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন নির্বাহী প্রকৌশলী।
এ নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় গত ১৫ জুলাই ২০২৩ তারিখে "কাজ না করেই বিল উত্তোলন" সংবাদ প্রকাশের পর তড়িঘড়ি করে নিন্ম মানের কাজ করে। "দীর্ঘদিন আগে তদন্তের মেয়াদ শেষ হলেও আজও শেষ হয়নি তদন্ত, সেই যোগসাজশে চলছে তদন্ত" মর্মে পত্রিকায় প্রকাশের পর নির্বাহী প্রকৌশলী ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে যা প্রতিবেদন উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ভিত্তিহীন বলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এরপর গত ১৭ আগষ্ট কোন প্রকার নোটিশ ও দরপত্র ছাড়াই ৩টি কাজ করে বিল উত্তোলনের পাঁয়তারা করছে সিরাজগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) সংবাদ প্রকাশের পর কার্যাদেশ ছাড়া তাড়াহুড়া করে এ প্রকল্পে নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করে যা জনমনে নানান প্রশ্ন জেগে উঠেছিল।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী জানান, এখানে দরপত্র ছাড়া নিন্ম মানের ইটের কাজ হয়েছে, এ কাজে কোনো নোটিশ হয়নি, এ জন্য দরপত্রও হয়নি, কার্যাদেশ হয়নি । তড়িগড়ি করে আমাকে পূর্বের তারিখ ব্যবহার করতে বলায় আমি বিস্তারিত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
পরে নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওখানে কাজও করিনি, এজন্য বিলও প্রদান করিনি।
গত ২৩ জুলাই ২০২৩ তারিখে "কবর থেকে ১১ বছর পর টাকা উত্তোলন করলেন কাজেম" । তারপরের দিন "জন্তিপুরে করব থেকে জীবিত হলেন আরও ৬ জন" এরপরের দিন "খাল খননে জন্তিপুরের ১১৪ সদস্য কিছুই জানে না" তারপর "খাল খননের ৪১ লাখ টাকা গেল কোথায়?" মর্মে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার তাড়াশের ভদ্রাবতী খাল খননে একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর শুরু হয় খাল খননে তদন্ত। আর তখন থেকেই নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম জেলার সংবাদ কর্মীদের নানা প্রলোভন ও ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার চেষ্টা করছে। থেমে নেই তার নিত্যনতুন কারিশমা !
গত ৩ আগষ্ট তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পাবনা ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। যার সিরাজগঞ্জ এলজিইডির জেলা প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী প্রকৌশলীকে ২নং সদস্য করে কমিটি ঘোষণা করে।
অথচ তদন্ত শুরুর পূর্বেই ভূতপূর্বভাবে ৯ আগষ্ট প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে বদলি করা হয়। এর আগে ৭ আগষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসে থেকে ১২নং এলসিএস গ্রুপের ২০ং মৃত কাজেমের জন্য ৬ জনকে শোকজ করা হয়। যা ১২ নং এলসিএস গ্রুপের চুক্তিপত্রের ৬ ধারায় দেখা যায়, ব্যক্তি দিয়ে কাজ করার কথা লেখা আছে। সেখানে আরো দেখা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী ও এলসিএস গ্রুপের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে, অথচ নির্বাহী প্রকৌশলী অফিস থেকেই ব্যক্তি দিয়ে কাজ না করে যন্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছে , এখন মৃত ব্যক্তি কাজেমের জন্য জেলার অধীনস্থ কর্মকর্তাদের শোকাজ করা হয়েছে।
এই প্রকল্পে গত (১৭ জুলাই) সোমবার সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের জন্তিপুর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দুদক কর্মকর্তারা প্রাথমিক ভাবে প্রকল্পে নয়-ছয়ের ঘটনার সত্যতা পায়, পরবর্তী কার্যক্রম করার জন্য দুদকের উর্দ্ধতন অফিসে তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
এরপর নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম ওই খাল খননে দুর্নীতির সংবাদ আড়াল করতে কয়েকটি পত্র পত্রিকায় খাল খননের পজেটিভ সংবাদ প্রকাশ করান। তার এই মাস্টার পরিকল্পনায় সত্যকে মিথ্যা বানানোর অপচেষ্টা এখনো থেমে নেই।
এবি/ওশিন