সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : গত ৫ আগস্ট নতুন সরকার আসার পর বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল। দীর্ঘদিন ধরে জুয়েল ও তার সহযোগীরা চাঁদা দাবি করে আসছে আবদুর রহমান ও তার ভাইদের কাছে । কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় আবদুর রহমান বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের জুয়ালভাঙ্গা গ্রামের মৃত কুদ্দুসের ছেলে জুয়েল, বেশ কিছু দিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছে আবদুর রহমান ও তার ভাইদের কাছে। কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টায় জুয়েল তার সহযোগী ফেরদৌস, আবুল চৌধুরী, লতিফ, কামরুল, মজনু, সুমিত, হায়দার আলী, মাসুদ রানাসহ আরও দশ থেকে বারো জন রামদা, ছুরি, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। কিন্তু কাউকে না পেয়ে বাড়ি ঘর থেকে নগদ প্রায় ৪ লাখ টাকা এবং ১০ লাখ টাকা সমমূল্যের গহনা লুটপাট করে ভাঙচুর চালায়। এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র লুটপাট শেষে ভাঙচুর করে চলে যায় জুয়েল বাহিনী।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আবদুর রহমান ও তার ভাই হাসেম, জাহাঙ্গীর ও আব্দুল আজিজের বাড়ি ঘরেও ভাঙচুর করা হয়েছে। এসময় তারা লুটপাটের বিষয় মিডিয়ার সামনে উল্লেখ করেন। এসময় এলাকাবাসী জানায়, জুয়েল ইয়াবা সেবন ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত, এলাকার লোকজন তার ভয়ে মুখ খুলতে পারে না।
অভিযোগকারী আবদুর রহমান জানান, আমরা দুই ভাই চাকরি করি, দুই ভাই ব্যবসা করি। দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছে জুয়েল ও তার সহযোগীরা। এগুলো না দেওয়ায় রাস্তায় আমার ভাইয়ের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে জুয়েল বাহিনী।
তিনি আরও জানান, জুয়েল এক সময় আওয়ামী লীগ করলেও গত ৫ আগস্ট নতুন সরকার আসার পর থেকে এখন বিএনপির বড় নেতা হয়ে গেছে, অথচ আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
এবিষয়ে অভিযুক্ত জুয়েল রানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার বাড়িতে গেলে বাসায় পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তার স্ত্রী আমিনা জানান, জুয়েল বিএনপি রাজনীতি করে। তিনি আরও জানান, ঐদিন ওদের বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে, কিন্তু এখানে জুয়েলের সম্পৃক্ততা নেই।
এবিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান, বিএনপি থেকে কঠোর নির্দেশ কেউ হিংসাত্মক ভাবে ভাঙচুর, চাঁদাবাজি দখল এমন অভিযোগ যার বিরুদ্ধে উঠবে, তাকেই বহিষ্কার করা হবে।
তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে এ ঘটনায় জুয়েলসহ দু'জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমার বাঙলা/এমআর