মাহবুব চৌধুরী , সিরাজগঞ্জ: ২০২৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে দেশের মোট বিদ্যুৎ সরববরাহের ১০ শতাংশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্যপূরণে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, সরকার সৌর শক্তি ও বায়ু শক্তি ব্যবহার করে সারা দেশে সৌরবিদ্যুৎ ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জের যমুনার তীরে ৬০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।
এ মাসেই এ প্রকল্প থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে। পাশাপাশি সরকার দেশের বিভিন্ন জায়গায় বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে, এরই অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জে ২০১৮ সালে ৪২ কোটি ব্যয়ে বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। কিন্তু কাজ শেষ হলেও পাঁচ বছরেও চালু হয়নি প্রকল্পটি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ শহরের মালশাপাড়ায় যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়ে ঘেঁষে ক্রসবার-৩ (চায়নাবাঁধ -৩)এ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ৪২ কোটি ব্যয়ে বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মিত ৮টি টাওয়ার দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু টাওয়ারের পাখা গুলো ঘুড়ছে না, ফলে কোনো প্রকার বিদ্যুৎও উৎপাদন হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার (ক্রসবাঁধ-৩) চায়না বাদে যমুনার তীরে নির্মিত বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রেটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ব্যস্তবায়ন করা হয়, এ প্রকল্পটি নির্মাণ করেন প্যান এশিয়া পাওয়ার সার্ভিস লিমিটেড। যাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৪২ কোটি টাকা । ৮টি টাওয়ারের মাধ্যমে ২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে টাওয়ার গুলো স্থাপন করা হয়েছিল। যা জাতীয় গ্রিড সরবরাহের আশায় বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রেটি নির্মাণ করা হয়েছিল, বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্যান এশিয়া পাওয়ার সার্ভিস লিমিটেড স্বত্বাধিকারী ফজলুর সঙ্গে মুঠোফোনের একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
সিরাজগঞ্জ নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফারুক জানান, এই প্রকল্পটি এখনও চলমান। এখান থেকে এখনও বিদ্যুৎ না পাওয়া যায়নি, এ প্রকল্প চালু হলে আমাদের অধীনে আসবে।এ বিষয়ে বিস্তারিত পিডিবি অফিসে জানতে পারবেন।
পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ( স্রেড) উপপরিচালক (প্রশাসন) মো: জিয়াউদ্দিন আহমেদ জানান, আমরা সিরাজগঞ্জের ঐ প্রকল্পে পর্যাপ্ত বাতাস পাচ্ছি না, এ জন্য টাওয়ার গুলোর উচ্চতা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। অল্প বাতাসে কিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, তা আমরা আমেরিকান কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এটা আমাদের একটা গবেষণা মূলক একটা প্রকল্প ।
আশা করছি, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের দিকে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।
এবি/এইচএন