সংগৃহিত
সারাদেশ
চলন বিলের রাস্তার দরপত্রে অনিয়ম

অভিযোগকারী প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেয়ার চেষ্টায় এলজিইডি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : দরপত্রে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অকৃতকার্য হয়। পরবর্তীতে ঐ প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনা হয়। কিন্তু অনিয়ম করার পরও শাস্তি না দিয়ে উল্টো ওই প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে কাজ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জ এলজিইডি। গত চার মাস ধরে অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও আজও ব্যবস্থা নেইনি কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ করে মোহাম্মদ ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেই অভিযোগকারী প্রতিষ্ঠানকেই কৌশলে বাদ দেওয়ার চেষ্টায় আছে ঢাকাসহ সিরাজগঞ্জ জেলার এলজিইডির কর্মকর্তারা ।

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, গত (৯ জানুয়ারি) মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দরপত্রে তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। যার আইডি নং (৯০৭২২৪ )। কাজের নাম (হাটিকুমরুল বনপাড়া মহাসড়ক হতে বারুহাস হেদার খাল ভায়া কুন্দাইল সুন্দরীয়া রাস্তা) (চেঃ ৫১৮৫ - ১১১৯৯ ) মিঃ যার রাস্তার আইডি (১৮৮৮৯২০১৭)

উক্ত কাজে ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স প্রাঃ লিঃ, মিম কনষ্ট্রাকশন ও জিনাত আলী জিন্নাহ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দরপত্রে মিম কনষ্ট্রাকশন অকৃতকার্য হয় (সিমিলার কাজ না থাকায়) । যার পরিপ্রেক্ষিতে ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স প্রাঃ লিঃ এর কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে (পাবনা- বগুড়া) প্রকল্প পরিচালক অফিসে অনুমোদনের জন্য প্রদান করা হয়। এক সময়, পাবনা বগুড়া প্রকল্পে পরিচালকের সহায়তায় পুনঃ মূল্যায়নের জন্য আবার জেলায় পাঠানো হয়।

পুনঃ মূল্যায়নে নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম মিম কনষ্ট্রাকশনের পক্ষে মতামত দিয়ে স্বাক্ষর করে। টেন্ডার কমিটির অন্য সদস্যদেরও মিম কনষ্ট্রাকশনের পক্ষে মতামত দিয়ে স্বাক্ষর করতে চাপ প্রয়োগ করেন বলে জানা যায়। কিন্তু অন্য সদস্যরা নোট অপ ডিসেন্ট ( দ্বিমত ) পোষন করে দরপত্রটি ঢাকা অফিসে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায় । এরকম অনৈতিক কার্যক্রম দীর্ঘদিন চলতে দেখে ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী কবির তালুকদার গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ করে । এরপর কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ২৫ ফেব্রুয়ারি সংবাদ প্রকাশ পায় এবং ১০ মার্চ ঐ দরপত্র নিয়ে আবারও সংবাদ প্রকাশ পায়। অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, অনৈতিক উদ্দেশ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুস এন্ড ব্রাদার্সকে দরপত্র থেকে বাদ দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রেখে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিতে থাকে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়।

এবিষয়ে মোহাম্মদ ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স প্রাঃ লিঃ এর সত্ত্বাধিকারী মোঃ কবির তালুকদার জানান, আমার দরপত্রটি চূড়ান্ত করে ঢাকা অফিসে পাঠানো হয়েছিল। তা কেনো আবার পুনঃ মূল্যায়নের জন্য আবার জেলায় আনা হলো তার তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে আসল তথ্য। তিনি আরও জানান, চার- পাঁচ মাস অতিবাহিত হয়ে গেল । এতো দিন কেনো কাজটির কার্যাদেশ দেওয়া হলো না। গত ৩০ এপ্রিল আমার লাইসেন্স লক হয়ে যায় । হঠাৎ ২ মে এই দরপত্রের সময় বাড়ানোর নোটিফিকেশন আসে। যাতে সময় দেওয়া হয় ৮ মে মধ্যে একসেপ্ট করতে হবে। অন্যথায় বাতিল বলে গণ্য হবে।

গত ৭ মে সুপ্রিম কোর্টে লক অবমুক্তকরণে রায় হয়। একই তারিখে অবমুক্ত চেয়ে বিপিপিএ বরাবর আবেদন করি। কিন্তু অজানা কারণে আমার ব্লকটি দুই দিন পর অর্থাৎ ৯ মে (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় লক অবমুক্ত করা হয়। যার ফলে আমরা ৮ মে সময় বাড়ানোর জন্য নোটিফিকেশন একসেপ্ট করতে পারিনি। দরপত্রটি এতো দিন ধরে কেনো ঝুলে আছে। অথবা দরপত্র থেকে বারবার কে অথবা কাহারা অনৈতিকভাবে আমাকে বাদ দেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত আছে।

এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আহরাম আলী জানান, এই দরপত্র এখন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হাতে। আমার কিছু করার নাই।

এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির সদ্য নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, আমি নতুন এসেছি। আমি ফাইল দেখে ব্যবস্থা নেব।

অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জুলফিকার আলী বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। দরপত্রে মিম কনস্ট্রাকশন অকৃতকার্য হয়েছে। তার আরসিসি রাস্তার কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। তাদের বিল্ডিং কাজের অনেক অভিজ্ঞতা আছে। দরপত্রে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অপরাধে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শাস্তি হওয়ার কথা। এবিষয়ে আমি প্রকল্প পরিচালককে কয়েকবার অবহিত করেছি।

উল্লেখ্য যে, এলজিইডি কর্মকর্তাদের অদক্ষতায় গত বছর ২৭ কোটি টাকা উন্নয়ন বঞ্চিত হয় সিরাজগঞ্জবাসী। এছাড়া খাল খননে মৃত ব্যক্তির নামে স্বাক্ষর ও ভুয়া মাষ্টার রোল বানিয়ে কয়েক কোটি টাকা উত্তোলন এবং জেলার একাধিক রাস্তায় নিম্ন মানের কাজ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন ছাড়াই কোটি কোটি টাকার বিল প্রদানে অনিয়ম। তাড়াশ বারুহাস ও তাড়াশ কুন্দাইল রাস্তায় ১২ কোটি টাকার কাজের অনিয়মে প্রমাণ পায় তদন্ত কর্মকর্তারা। যার ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে এবার দরপত্রে অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন এলজিইডির কর্মকর্তারা। দরপত্র অনিয়মের অভিযোগে এর আগে রংপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী ও সিনিয়র প্রকৌশলীর কারাদণ্ড হয়েছিল।

এবি/এইচএন

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

প্রধান উপদেষ্টার কাছে রোড ম্যাপ চেয়েছি

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচনী রোড ম্যাপ...

ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা করা উচিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলকে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা ক...

আয়নাঘর-ভাতের হোটেল থাকবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিবিতে থাকবে না আয়নাঘর। থাকবে না কোনো ভাত...

পূজায় নিরাপত্তায় থাকবে ২ লাখ আনসার

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশে...

ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৫ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্ট...

উপস্থানায় আসছেন অপু বিশ্বাস

বিনোদন ডেস্ক : ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস...

বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্র নিহত 

জেলা প্রতিনিধি : বগুড়ায় ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে দুই স্কুলছা...

সচিব আবুল কালাম আজাদ গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচি...

ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৫ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্ট...

একদিনে ৩১ লাখ টাকা জরিমানা 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে একদিনে প্র...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা