নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোটে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে ফলাফলের গেজেট স্থগিত রাখা হয়েছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইন অনুযায়ী, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে প্রকাশিত গেজেট স্থগিত রেখে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারবে ইসি। সে অনুসারে তদন্ত চলছে। রিপোর্ট এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমন পরিস্থিতিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, তদন্ত প্রতিবেদনে কারচুপির অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইসি নির্বাচন বাতিল বা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করতে পারে।
ইসি সচিব আরও বলেন, গণমাধ্যমে লক্ষীপুরের একটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি ভোট কেন্দ্রের কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। ইসি সেটির বিশ্লেষণ করেছে। এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সরেজমিন তদন্তের পর তারা প্রতিবেদন দিলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৬ নভেম্বর) লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এ দিন সামাজিক মাধ্যমে ভোটগ্রহণের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, সাদা রঙের পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তি ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে একের পর এক সিল মারছেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলা হয়, যিনি সিল মেরেছেন তার নাম আজাদ হোসেন। তিনি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে ইসির নজরে আসে বিষয়টি।
এ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন- লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মুহাম্মদ রাকিব হোসেন, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. সামছুল করিম ও আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সেলিম মাহমুদ।
এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩৭৪৪ জন। ১১৫ টি কেন্দ্রের ৮২৭ টি কক্ষে এ ভোটগ্রহণ করা হয়। এতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংকু ১ লাখ ২০ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। ভোট পড়ে ৩১.৮৫ শতাংশ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ৩৮৪৬ টি ভোট পেয়েছেন।
অপরদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শাহজাহান আলম ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ওপেন ভোট নেওয়ার পাশাপাশি জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ তোলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা।
এবি/এইচএন