মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ইকবাল মিয়া (৩০) নামে এক ব্যক্তির খণ্ডিত মরদেহ রেললাইন থেকে উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল থেকে নিহত ইকবাল হোসেন নিখোঁজ ছিলেন। তবে পরিবারের দাবি শ্বশুর বাড়ীর লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে রেল লাইনের ওপর লাশ রেখে গেছে।
রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অদূরে রেলগেইট এর পাশ থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। নিহত ইকবাল হোসেন উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের বরচেগ গ্রামের ইলিয়াস মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে উপজেলা পরিষদের অদূরে রেলগেইট এর পাশে স্থানীয়রা কয়েক খণ্ডিত লাশ দেখতে পান। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে ইকবালের পরিবার এসে লাশটি শনাক্ত করেন। ঘটনাস্থল থেকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নিহতের হাত-পা বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহত ইকবালের পরিবার সুত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার ইকবাল কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভেড়াছড়া গ্রামের শ্বশুর বাড়ীতে বেড়াতে যায়। শ্বশুর বাড়ীর লোকজন বলছে, সেখান ( শ্বশুর বাড়ী ) থেকে পরদিন শনিবার বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ইকবালের সন্ধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হয়।
এছাড়া পরিবারের পক্ষ থেকে কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। ইকবালের মরদেহ পাওয়ার পর উভয় পরিবার ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে অভিযোগ করেছেন। রেললাইন থেকে উদ্ধারকৃত মরদেহের চেহারা এবং জিডি করা নিখোঁজ ইকবালের ছবির সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে।
নিহত ইকবালের ভাই আরমান আহমেদ বলেন, আমার ভাইয়ের বিয়ের পর থেকে পরিবারে অশান্তি ছিলো। যে মেয়েকে বিয়ে করেছেন তার আগে থেকেই অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিলো। এই মেয়েই আমার ভাইকে হত্যা করিয়েছে।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর রবিবার সকালে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, গত শনিবার নিহত ইকবালের বাবা থানায় এসে একটা জিডি করে গেছেন এই বলে যে, বিকেল থেকে তাঁর ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, আমরা রেললাইন থেকে লাশ উদ্বার করেছি। মৃতদেহ থেকে পাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পুরো শরীর ছিন্নভিন্ন অবস্থায় রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর জানা যাবে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
আমারবাঙলা/ইউকে