কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ। সবুজ ঢেউ এ উপজেলার সমস্ত কৃষকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে ধান গাছের পাতা ও কাঁচা শীষ। কয়েকদিনের মধ্যেই ধানের শীষে দুধ- ছানা গঠন শুরু হবে। আর এমন সবুজ সমুদ্রের ঢেউয়ে দুলে উঠছে প্রকৃতি। ইরি-বোরো ধানের এ শীষ দেখে আনন্দে বুক ভরে ওঠে কৃষকের। যেন হারিয়ে যায় সবুজের মাঠে, দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো বিকশিত করে তুলেছে ।
অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে এ বার বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। বর্তমানে মাঠে দোল খাওয়া নতুন ধানের নতুন স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১২ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; এরমধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান ৪৬১০ হেক্টর, উফশি জাতের ৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৫০ সেক্টর জমিতে চাষ হবে। কয়েকদিন পরেই ধানের সবুজ চারা এবং কাঁচা শীষ হলুদ বর্ণ ধারণ করবে। এরপর সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। সেই মাঠ ভরা ফসলের স্বপ্ন দেখে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠবে আনন্দের ছোঁয়া। রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষানীর গোলা। বোরো মৌসুমকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখে এ অঞ্চলের চাষিরা।
এবছর নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিলো। বালাম নাশক সংকট ছিল না। ফলে ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর হয়েছে। ধানের সবল সতেজ চারায় শীষ বের হচ্ছে। তাই বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, চলতি বোরো মৌসুমে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কটিয়াদী পৌরসভার বোয়ালিয়া গ্রামে ইরি-বোরো ধানের মাঠে সবুজের সমারোহ। ধানের প্রতিটি জমিতে শীষ উকি দিচ্ছে। জমি পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকদের। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা ধান গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। মাঠে সেচ, সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং কেউ কেউ পার্চিং ব্যবহার করছেন।
কৃষকরা জানান স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ও পরামর্শে চাষাবাদ কৃত ইরি-বোরো ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি বোরো ধান কাটা শুরু হবে । তখন পূরণ হবে কৃষকের স্বপ্ন। উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক, মুজিবুর, মিলন, রুকনুদ্দিন, মুসলিম উদ্দিন, আবুল কাশেমসহ অনেকেই বলেন, চলতি বছর আমরা ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি। সামনে আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বিগত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবো।
কটিয়াদী উপজেলা কৃষি অফিসার, কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। ফলন ও আশানুরূপ হয়েছে । যে কারণে আমরা ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি।
আমারবাঙলা/ইউকে