বগুড়ার শেরপুর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি এবং তা না দেওয়ায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন এক ভুক্তভোগী। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন শেরপুর উপজেলার মোবারক হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
সংবাদ সম্মেলনে মোবারক হোসেন জানান, ২০২৪ সালের ১২ মে তার ভাগ্নে আলমগীর হোসেনের স্ত্রী আখি খাতুন (২৬) আত্মহত্যা করেন। এরপর উভয় পরিবারের সম্মতিতে এবং পুলিশি উপস্থিতিতে আপোষ নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু ঘটনার প্রায় ১০ মাস পর শেরপুর থানার এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম তার ভাগ্নেকে একাধিকবার ফোন করে অভিভাবকসহ থানায় দেখা করতে বলেন। পরে মামা হিসেবে দেখা করতে গেলে তিনি তার কাছ থেকে ঘুষ দাবি করেন।
মোবারকের অভিযোগ, এসআই জাহাঙ্গীর প্রথমে দুই লক্ষ, পরে এক লক্ষ টাকা দিলে বিষয়টি ‘ম্যানেজ’ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ১৩ এপ্রিল তারিখে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি মামলা দায়ের করেন এবং তাতে পাঁচজন নিরীহ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ১৬ এপ্রিল আমার স্ত্রী মাতৃত্বকালীন অবস্থায় গর্ভপাত করেন এবং জমজ সন্তান মারা যায়। এমন দুঃখজনক সময়ে থানায় গেলে আমাকে আটক করা হয়। পরে পরিস্থিতির কথা জানালে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। শেষে ২০ হাজার টাকা ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।”
মোবারক হোসেন দাবি করেন, তার কাছে ২৫ মিনিটের একটি অডিও রেকর্ড রয়েছে, যেখানে এসআই জাহাঙ্গীর আলমের ঘুষ দাবি ও ভয়ভীতির প্রমাণ রয়েছে। তিনি সেই রেকর্ড সাংবাদিকদের কাছে হস্তান্তর করেছেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং পাঠানো বার্তারও কোনো উত্তর দেননি।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) সজীব শাহরীন বলেন, “বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আমারবাঙলা/ইউকে