জেলার জলঢাকা উপজেলার কালিগঞ্জ বাজারে শফিউর রহমান নামের এক ব্যাক্তিকে শীর্ষ চাঁদাবাজ হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীদের ব্যানারে এ কর্মসুচি পালন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেল সারে ৫টার দিকে কালিগঞ্জ বাজারে জলঢাকা-ডিমলা সড়ক অবরোধ করে ওই কর্মসুচি পালন করেন বাজারের ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। এসময় সড়কের দুই ধারে যানবাহনের দীর্ঘ সারি আটকে থাকে।
সমাবেশে কালিগঞ্জ বাজারে জনৈক শফিউর রহমান ওরফে সাদেককে জলঢাকার শীর্ষ চাঁদাবাজ উল্লেখ করে তাকে আইনের আওতায় নেয়ার দাবি জানানো হয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ শফিউর রহমান বিগত ফ্যাসিষ্ট আ.লীগ সরকারের সময়ে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলেন। ফ্যাসিস্ট আ. লীগ সরকারের পতনের পর এখন জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আবারো চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছেন। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কর্মকাণ্ডে ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।
বক্তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে ডিমলা থানায় দায়ের হওয়া একটি চাঁদাবাজির মামলায় শফিউর রহমান ২০ নম্বর আসামী। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ওই মামলাটি হয়। মামলা নম্বর ২৪। অথচ এই আসামী বর্তমানে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি অব্যহত রেখেছেন।
সমাবেশে গোলনা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘সফিউর রহমান ওরফে সাদেক বিএনপির কোনো সংগঠনের সদস্য নন। তিনি দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নাম ভাঙিগে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার নিজের কোনো জমি বা ব্যবসা নেই। চাঁদাবাজি তার মুল ব্যবসা। অতি সম্প্রতি সে চাঁদা না পেয়ে কালিগঞ্জ বাজারের ৫জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।’
সফিউর রহমানের দায়ের করা ওই মামলার এক নম্বর আসামী কালিগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাজার বণিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম সাদেকের বিরুদ্ধে জলঢাকা থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দেয়। কিন্তু ওই মামলাটি এখনো রেকর্ড না করে সাদেকের দায়ের করা মিথ্যা মামলাটি রেকর্ড করেন।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, কালিগঞ্জ বাজার বনিক সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, গোলনা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জব্বার, বনিক সমিতির সহ-সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক, দপ্তর সম্পাদক সহিদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
এ বিষয়ে কথা বললে জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ দুইটি মামলা পেয়েছি। একটি রেকর্ড করা হয়েছে, অপরটি প্রক্রিয়াধীন আছে। বিষয় দুটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ এ বিষয়ে কথা বললে সফিউর রহমান বলেন, ‘জুয়া খেলায় প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করা হয়েছে। আমি এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয়। আমি বিএনপি করি, বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পের পক্ষে কথা বলার কারনে সাবেক সংসদ সদস্যের মামলায় আমাকে আসামী করা হয়েছে।
আমারবাঙলা/ইউকে