স্বামীর প্রবাস জীবনের সুযোগ নিয়ে একের পর এক করে গেছেন পরকীয়া। স্বামীর অর্জিত টাকা-পয়সা উড়িয়েছেন প্রেমিকদের নিয়ে। অভিভাবকরা বারবার সতর্ক করার পরও এই উদ্দাম জীবন থামাননি স্ত্রী। পরিবার-পরিজন, সন্তানের দোহায় দিয়েও তাকে থামানো যায়নি।
অবশেষে তার এই লাগামহীন যৌনজীবন যখন পরিবার আর মেনে নিতে পারছিল না, তখনই বাধে বিপত্তি।
সম্প্রতি মাগুরা জেলার এমনই ঘটনা আলোড়ন তুলেছে। ভুক্তভোগী প্রবাসীর নাম শহীদুল ইসলাম নয়ন (৪৫)। জেলার সদর থানার বাঁকা হরিশপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল মোল্লার ছেলে তিনি।
একই থানার বাটিকাবাড়ি গ্রামের মিজানুর রহমানের কন্যা সুরাইয়া ইসলাম আশাকে (৩২) নয়ন বিয়ে করেন প্রায় ১৫ বছর আগে। বিয়ের পর তাদের এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তারপর মধ্যপ্রাচ্যে চাকরিরত নয়ন দেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন।
জানা যায়, স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে আশা একাধিক পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ান। কখনো পাশের বাড়ির যুবকের সঙ্গে, কখনো পাশের গ্রামের কারো সঙ্গে। আশার এই অনৈতিক জীবন সম্পর্কে জানতে পেরে নয়নের মা মুক্তিযোদ্ধা সেলিনা খাতুন মেনু তাকে সতর্ক করেন। তাতে আশা ক্ষিপ্ত হয়ে একাধিকবার বৃদ্ধা শাশুড়ির গায়ে হাত তোলেন।
ঘটনাক্রমে আশার এই উত্তাল যৌনজীবন সম্পর্কে জ্ঞাত হন তার প্রবাসী স্বামী নয়ন। নয়ন স্ত্রীকে এসব করতে বারণ করায় আশা আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন এবং প্রেমিকদের দিয়ে স্বামীকে শাসান। জীবননাশের হুমকিও দেন।
এমতাবস্থায় নয়ন দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু তাতেও থামাতে পারেননি আশার বেসামাল যৌনচারিতা। একই সময়ে একাধিক পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের প্রমাণ পান তার স্বামী নয়ন।
সম্প্রতি এক যুবকের সঙ্গে গভীর রাতে বেসামাল অবস্থায় হাতে-নাতে ধরা পড়েন আশা। সঙ্গত কারণেই আশার সঙ্গে সংসার বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন নয়ন। গত ২০ মার্চ কাজী অফিসের মাধ্যমে দেনমোহর ও খোরপোশ বাবদ এক লাখ ২৭ হাজার টাকা পরিশোধ করে আশাকে ডিভোর্স দেন।
তাতেই ক্ষেপেছেন আশা। গতকাল (২৬ মার্চ) সোহেল (২২), মিজানুর রহমান (৬৫), আশিক রহমান (২২), হিটলার হোসেনসহ (২৮) প্রায় ৩০ জনের এক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নয়নের বাড়িতে তাণ্ডব চালান। নয়নের বৃদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা মাকে শারীরিকভাবে প্রহৃত করেন।
এ ঘটনায় গতকাল (২৬ মার্চ) প্রবাসী নয়ন মাগুরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডি নং ১৬৮৭। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ আঃ জব্বার তালুকদার জিডি করার বিষয়ে অবগত আছেন জানিয়ে বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট জমা দিব।’
এ প্রসঙ্গে শহীদুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘আমাকে সর্বশান্ত করে দিয়েছে আমার স্ত্রী। আমি গত দুই দশকের প্রবাসজীবনে যত টাকা উপার্জন করেছি, তার সব আমার স্ত্রী লুটপাট করেছে। পরকীয়া প্রেমিকদের নিয়ে উড়িয়েছে। স্বর্ণালঙ্কার বানিয়েছে। টানা কুড়ি বছর প্রবাসে থেকেও আমি এখন রিক্ত। এখন আমার না আছে অর্থ, না আছে সংসার। উল্টো আমাকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
একই প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য সুরাইয়া ইসলাম আশাকে মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
আমারবাঙলা/ইউকে