কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ভিজিএফ কার্ড না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসে ভিড় করছেন দুস্থ ও অতিদরিদ্র পরিবারের নারী-পুরুষ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা সূত্রে জানা যায়, পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এ বছর ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার জন্য মাথা পিছু ১০ কেজি করে ৩২ হাজার ৪১৩টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে তিন লাখ ২৪ হাজার ১৩০ কেজি চাল বিতরণের কর্মসূচি রয়েছে।
এর মধ্যে জিনারী ইউনিয়নে পাঁচ হাজার ৫৫৯টি, সিদলা ইউনিয়নে ছয় হাজার ৪০৯টি, গোবিন্দপুর ইউনিয়নে ছয় হাজার ৪২৬টি, আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নে দুই হাজার ৭৯৭টি, শাহেদল ইউনিয়নে তিন হাজার ৩৫৪টি, পুমদী ইউনিয়নে চার হাজার ৭৭৭টি ও হোসেনপুর পৌর এলাকায় তিন হাজার ৮১টি ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করা হয়।
সোমবার (২৪ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, ভিজিএফ কার্ড পেতে উপজেলা নির্বাহীর কার্যালয়ের সামনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও কার্ড না পেয়ে বিমুখ হয়ে ফেরত যাচ্ছেন অনেকেই। একটি কার্ডের জন্য দুপুর ১টা থেকে ৩০ মাস বয়সি শিশুকে কোলে নিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বসে আছেন এক নারী। তবু তাদের ভাগ্যে জোটেনি একটি কার্ড।
এরকম কয়েকজনের মধ্যে রয়েছেন পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের পূর্ব দ্বীপেশ্বরে কৃষি শ্রমিক মনিরের স্ত্রী শিরিনা। তিনি জানান, আমার আট বছর বয়সী হেপি নামে একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে রয়েছে। আমার স্বামী অসুস্থ সে জন্য কাজ কাম করতে পারে না। এখন তার চলা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। সে জন্য একটি কার্ডের জন্য অপেক্ষা করছি। ইউএনও স্যার আমাদের বসিয়ে অফিসে তালা দিয়ে চলে গেছেন। কখন যে আসবে?
শিরিনার মত কার্ড পেতে এ সময় আরও বসে থাকতে দেখা যায়, বেদেনা (৬০) নামের আরেক নারী তিনি বলেন, আমার স্বামী প্যারালাইসিস হয়ে অসুস্থ হয়ে ঘরে পড়ে আছেন। তিনি পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের ফজলু মিয়ার স্ত্রী। এ সময় কার্ড পেতে আরো অপেক্ষা করতে দেখা যায়, জিনারী ইউনিয়নের বেল তলী গ্রামের নুরুল ইসলামের স্ত্রী রিপা আক্তার, একই এলাকার মিনার মিয়ার স্ত্রী ফরিদা আক্তার, রাসেল মিয়ার স্ত্রী মোছা.চাম্পা আক্তার, মৃত সাদেক মিয়ার স্ত্রী মরিয়ম আক্তার, সিদলা ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামের আবু সাদেকের স্ত্রী খুরশেদা।
তারা এ সময় জানায়, চেয়ারম্যানদের কাছে কার্ডের জন্য গেলে বলে মেম্বারদের কাছে যেতে। মেম্বারদের কাছে গেলে বলে কার্ড শেষ হয়ে গেছে। আরো আগে আসো নাই কেন? খোঁজ নিয়ে জানা যায়; এর আগে অনেকেই কার্ড না পেয়ে ইউএনও অফিসে অপেক্ষা করে চলে গেছেন।
হোসেনপুর পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভ’মি) ফরিদ আল সোহান জানান, এদর মধ্যে অনেকেই একটি করে কার্ড পেয়েছেন;এর পরও আরো কার্ড পেতে অফিসে ঘুরাঘুরি করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাহিদ ইভা জানান, সরকারি পরিপত্র মোতাবেক ছয়টি ইউনিয়নের কার্ডগুলো সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিযদের চেয়াম্যানদের জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিতরণ করা হয়েছে।
আমারবাঙলা/ইউকে