মসলা জাতীয় ফসল ধনিয়া বাঙালির রসনা বিলাসে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। পাতা ও ধনিয়া গুঁড়া তরকারির স্বাদ বৃদ্ধি করে। ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে ও ধনিয়া ব্যবহার হয়।
এঁটেল দোআঁশ মাটি ধনিয়া চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। বিশেষ কোন যতন ছাড়াই এর সর্বোচ্চ ফলন হয়। বিঘা প্রতি মাত্র তিন-চার হাজার টাকা খরচ করে ২৫/৩০ হাজার টাকার ফসল বিক্রি করা যায়। অল্প পুঁজিতে অধিক লাভ হওয়ায় কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে প্রতিবছরই ধনিয়া চাষের পরিধি বাড়ছে। বারি ধনিয়া-১, এলবি—৬০, ৬৫ এবং সুগন্ধা জাতের উচ্চ ফলনশীল জাত প্রায় সারা বছর চাষ করা যায়। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ধনিয়ায় রয়েছে খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যাবি-১, ভিটামিন বি-২, ভিটামিন সি ও শর্করা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জালালপুর ,লোহাজুড়ি,ফেকামারা, চর ঝাকালিয়া, চর পুক্ষিয়া, মসূয়া ইউনিয়নের বেতাল, আলগীরচর, বৈরাগিরচর , আচমিতা ইউনিয়নের মধ্যপাড়ায়, চান্দপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া বিলসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধনিয়া চাষ হয়েছে।
ফেকামারা গ্রামের কৃষক বোরহান মিয়া ও হযরত আলী এ প্রতিবেদককে জানান, আগে আমরা সরিষা চাষ করতাম। এতে খরচ বেশি, লাভ কম। তাই গত দু’বছর ধরে ধনিয়া চাষ করছি। উৎপাদন খরচ বাদে বিঘা প্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা লাভ হয়। যা অন্য ফসল আবাদ করে পাওয়া যায় না। পাশ্ববর্তী চর ঝাকালিয়া গ্রামের কৃষক মানিক মিয়া বলেন, এক বিঘা জমিতে ধনিয়া আবাদ করে পাতা বিক্রি করেছি ৩৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে প্রায় ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।
এ ব্যাপরে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো.শফিকুল ইসলাম জানান, চলতি বছর এ উপজেলায় ৪০০ হেক্টর বা তিন হাজার বিঘা জমিতে ধনিয়া চাষ হয়েছে। বিঘা প্রতি পাতা উৎপাদন ১২—১৫ মণ আর পাকা ধনিয়া পাঁচ থেকে সাত মণ। সামান্য পরিচর্যায় এ ফসলটি থেকে চাষিরা অধিক লাভ পেয়ে থাকেন বলেও তিনি জানান।
আমারবাঙলা/ইউকে