আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে শুরু হলো জুলিয়া লেব্রও সেন্দ্রার 'নলিনী' শীর্ষক প্রদর্শনীর। প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ২১ শে জানুয়ারি ২০২৫ বিকালে লা গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হয়।
অ্যামাদিন রগম্যান, ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট ইন্ডিয়ার কালচারাল এটাচে বিশেষ অতিথি হিসেবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই প্রদর্শনীটি একটি তিন মাসের residency programme এর ফলস্বরূপ যার সহোযগিতায় রয়েছে ভিলা স্বাগতম, ইনস্টিটিউট ফসে দিল্লি, ঢাকাস্থ ফরাসি দূতাবাস, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা এবং বৃহত্ত আর্ট ফাউন্ডেশন।
'ভিলা স্বাগতম' ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত, যা শিল্প এবং সাহিত্যে সহায়তা প্রদানে কাজ করে । ২০২৪-২০২৫ সালে 'ভিলা স্বাগতম' প্রায় ৩০টি প্রখ্যাত রেসিডেন্সির সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ফ্রান্স, ভারত এবং বাংলাদেশে একটি অনন্য সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম তৈরির লক্ষ্যে কাজ করবে, যা এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের শিল্পীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ককে উৎসাহিত করবে।
‘বৃহত্ত আর্ট ফাউন্ডেশন’ ঢাকায় অবস্থিত একটি গবেষণাভিত্তিক এবং শিল্পীদের দ্বারা পরিচালিত প্ল্যাটফর্ম, যা শিল্পের প্রচারের জন্য বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে। বৃহত্ত আর্ট ফাউন্ডেশন শিল্পীদের সাথে স্থানীয় ও বিদেশী সম্প্রদায়ের সেতুবন্ধনে কাজ করে থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন কর্মশালা, রেসিডেন্সি ও শিল্পালোচনা আয়োজনের মাধ্যমে শৈল্পিক লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে আসছে।
উল্লেখ্য, শিল্পী জুলিয়া লেব্রও সেন্দ্রা বাংলাদেশে আসার পর তিনি প্রথমে নদী তীরবর্তী মানুষের সংস্কৃতি এবং সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত রীতিনীতি নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলেন। তবে মাঠে কাজ করার সময় তিনি উপলব্ধি করলেন যে মানুষের সঙ্গে নদীর আর কোনো সম্পর্ক নেই-এটি এখন একটি ভাঙা সম্পর্ক, একটি শূন্যতা এবং একটি মরে যাওয়া নদী।
এই উপলব্ধি তাকে ‘সোলাস্টালজিয়া’ ধারণাটির দিকে নিয়ে আসে, যা তার residency programme এর কাজের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হয়ে ওঠে। ২০০৩ সালে দার্শনিক গ্লেন আলব্রেচ্ট দ্বারা উদ্ভাবিত ‘সোলাস্টালজিয়া’ শব্দটি এমন এক মানসিক এবং অস্তিত্বগত উদ্বেগকে বর্ণনা করে, যখন মানুষ তাদের পুরনো পরিচিত প্রাকৃতিক পরিবেশে ভবিষ্যতের কোন চিত্র কল্পনা করতে অক্ষম হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তন, মানব কর্মকাণ্ড বা শিল্পোৎপাদনের বৃদ্ধির কারণে ঘটছে। এই সম্পর্কের বিচ্ছেদ আরো ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়, কারণ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় আবেগগত সংযোগ আর থাকে না।
ঢাকায় এই হতাশার অনুভূতি স্পষ্ট, যেখানে নদী তীরবর্তী মানুষের এবং বুড়িগঙ্গা নদীর সম্পর্ক এই ধারণাটির একটি উদাহরণ। তবে এটি কোনো স্থানীয় সমস্যা নয়-এটি একটি বৈশ্বিক উদ্বেগ। শিল্পী জুলিয়া লেব্রও সেন্দ্রার কাজের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে নদী তীরবর্তী সম্প্রদায় এবং তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ, বিশেষত বুড়িগঙ্গা নদীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতা তৈরী করা।
প্রদর্শনী সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৩ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত।
আমারবাঙলা/জিজি