রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের তত্ত্বাবধানে জুলাই অভ্যুত্থানকে উপজীব্য করে গত ২০ নভেম্বর ভাস্কর্য কর্মশালা শুরু হয়েছে। ব্রোঞ্জ কাস্টিং মাধ্যমে অভ্যুত্থানের বিভিন্ন মুহূর্ত ভাস্কর্যে প্রতিস্থাপন করবেন ভাস্কর হাবীবা আখতার পাপিয়ার নেতৃত্বে একঝাঁক ভাস্কর।
কর্মশালা নিয়ে ভাস্কর পাপিয়া বলেন, `আমি নিজেকে এখনো ভাস্কর্যের শিক্ষার্থী ভাবি। এর মাঝেই শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে একটি ভাস্কর্য কর্মশালা পরিচালনার আমন্ত্রণ পাই। এটি আমার শিল্প-ক্যারিয়ারের এক নতুন মাইলফলক।'
কর্মশালার থিম এবং প্রধান ফোকাস জুলাই অভ্যুত্থান। এ অভ্যুত্থানের একজন সৈনিক ছিলেন ভাস্কর পাপিয়া। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছেন রাজপথে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করেছেন। রক্তক্ষয়ী এই সময়টিকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন ভাস্কর পাপিয়া।
কর্মশালার উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশের চিত্রকলার জীবন্ত কিংবদন্তি অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার। প্রিয় শিক্ষক সম্পর্কে ভাস্কর পাপিয়া বলেন, 'আমরা যারা বৈষম্য নিয়ে কথা বলি তারা একবাক্যে স্বীকার করবেন আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গণের সবচেয়ে বেশী বৈষম্যের শিকার অধ্যাপক সাত্তার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যশস্বী শিক্ষক কেবল নন তিনি, তিনি পেইন্টিং এবং ছাপচিত্রের একজন লিজেন্ড। ১৯৮১ সালে প্রথম এশীয় দ্বি-বার্ষিক শিল্প প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড প্রাইজ পেয়েছিলেন তিনি। উডব্লক প্রিন্টকে তিনি দিয়েছেন অনন্য উচ্চতা। তার আঁকা একেকটি ছবি বাংলাদেশের চিত্রকলার স্থায়ী সম্পদ, পাশাপাশি তিনি লেখালেখিতেও অনন্য। তিনি নিয়মিত কলাম লিখেন বিভিন্ন পত্রিকায়। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যাও অনেক। অথচ গত ১৬ বছর তিনি শিল্পভুবনে তীব্র বৈষম্যের শিকার।'
উদ্বোধন-পর্বে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাস্কর্য বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক, খ্যাতিমান ভাস্কর অধ্যাপক কাওসার হাসান টগর।
এই মহৎ উদ্যোগের জন্য শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ভাস্কর পাপিয়া। শিল্পকলা একাডেমির এই অনন্য উদ্যোগ দেশের শিল্পপ্রেমীদের মাঝে বিপুল সাড়া জাগিয়েছে।
ভাস্কর পাপিয়া বলেন, শিল্পকলা একাডেমির বিভাগীয় পরিচালক কামরুন নাহার সৃষ্টি এবং মুস্তফা জামান মিঠু ভাই আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি সেটি সঠিকভাবে পালন করবো। অভ্যুত্থানকে ভাস্কর্যে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হবো।
কর্মশালা শেষে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করবে একাডেমি। কর্মশালাটি ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ