সাহিত্য ডেস্ক: বাংলা কথাসাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘‘দীনেশচন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণ পদক-২০২৪’’ পাচ্ছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. নাসরীন জেবিন।
গত ১৭ জানুয়ারি (২০২৪) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও আচার্য দীনেশচন্দ্র সেনের প্রপৌত্রী প্রফেসর দেবকন্যা সেন এক ইমেইল বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০২৩ সালে বঙ্গবন্ধু গবেষক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসকে এই স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।এর আগে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, পশ্চিমবঙ্গের লেখক মহাশ্বেতা দেবী, বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, সংগীতজ্ঞ ফিরোজা বেগম ও সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী, অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়াকে এই স্বর্ণ পদকে ভূষিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটি, ভারত ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ড. নাসরীন জেবিন এই সংগঠনের পক্ষ থেকে এবছর ‘‘দীনেশ-রবীন্দ্র পত্র সম্মাননা ২০২৪’’ নামে আরো একটি পদক পাবেন বলে জানা গেছে।
‘মৈমনসিংহ-গীতিকা’ প্রকাশের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে এই পদক নাসরীন জেবিনের মতো মেধাবী গবেষককে প্রদান করা হচ্ছে। ভারতের বিচারপতি সুধেন্দু মল্লিক, বিচারপতি চিত্ততোষ মুখার্জি, সুপ্রিয় ঠাকুর, বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, সমাজকর্মী অরোমা দত্ত এবং অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসকে এই পদক প্রদান করা হয়েছে।
জানা গেছে, কথাসাহিত্যিক ড. নাসরীন জেবিনের লেখার নিজস্ব ভঙ্গিমা পাঠককুলকে অনুপ্রাণিত করেছে। তার সাহিত্যের নানামুখী বিস্তার মানুষের চিত্তাকাশে অসীমতার দ্যোতনা এনে দেয়। এদেশের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যকে ঘিরেই তার লেখার জগৎ গড়ে উঠেছে। তার সৃষ্টির সম্ভারে যুক্ত হয়েছে উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা; যা বিখ্যাত কয়েকটি গবেষণা জার্নাল এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত ও পাঠক নন্দিত। সমসাময়িক সমাজের দ্বন্দ্ব, সংঘাত, সংকটের সমগ্রতা ও দ্রোহ উন্মোচিত হয়েছে তার উপন্যাসে। তবে কথাসাহিত্যেই তিনি সমৃদ্ধ থাকেননি; নানা ব্যঞ্জনায় গদ্যের অবয়বে গবেষণাতেও নিজেকে প্রকাশ করেছেন।
কথাসাহিত্যিক ড. নাসরীন জেবিনের লেখার নিজস্ব ভঙ্গিমা পাঠককুলকে অনুপ্রাণিত করেছে। তার সাহিত্যের নানামুখী বিস্তার মানুষের চিত্তাকাশে অসীমতার দ্যোতনা এনে দেয়। এদেশের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যকে ঘিরেই তার লেখার জগৎ গড়ে উঠেছে। তার সৃষ্টির সম্ভারে যুক্ত হয়েছে উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা; যা বিখ্যাত কয়েকটি গবেষণা জার্নাল এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত ও পাঠক নন্দিত।
তার প্রকাশিত গবেষণা গ্রন্থ হলো- ‘মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্পে নিম্নবর্গ’, ‘বাংলা ছোটগল্প’, ‘রবীন্দ্র বিচিত্রা’, ‘মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন ও উপন্যাস’, ‘বাংলাদেশের উপন্যাস’, ‘সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ঐতিহ্য ও শিল্পরূপ’, ‘প্রাচীন ঐতিহ্যে নারী’।এছাড়াও রয়েছে কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধের সংকলন। যেমন,‘নারী তুমি জয়িতা’, ‘ফিরে এসো সুতপা’, ‘নারীর পৃথিবী নারীর স্বপ্ন’, ‘দিঘিজল ছুঁয়ে যায় সর্বনাশা চিল’, ‘নারী তুমি অর্ধেক আকাশ’, ‘রূপন্তীর শেষ রাত’, ‘প্রতিবাদী নারী ও সমাজ’, ‘এক উঠোন আকাশ’, ‘অব্যক্ত’, ‘ঘাস ফড়িং’, ‘আমি তুমি ও সে’, ‘সাধের পালকে পূর্ণিমার চাঁদ’, ‘প্রজাপতি সুখ’, ‘মোহিনীর জন্য’, ‘টান’ প্রভৃতি।বের হয়েছে ‘উপন্যাস সমগ্র-১’।
সাহিত্যে অবদানের জন্য ইতোমধ্যে তিনি নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ‘বিশাল বাংলা প্রকাশনি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৬’, ‘সমরেশ বসু সাহিত্য পুরস্কার-২০২০’, ‘রাহাত খান স্মৃতি পদক’, ‘বিশ্ব সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার’, ‘দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ সাহিত্য পুরস্কার’ উল্লেখযোগ্য। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি চত্বরে বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ‘দীনেশচন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণ পদক’ এবং ‘দীনেশ-রবীন্দ্র পত্র সম্মাননা’-এই উভয় পুরস্কার ড. নাসরীন জেবিনকে প্রদান করা হবে।
এবি/এইচএন