সংগৃহীত
শিল্প ও সাহিত্য

কবি দাউদ হায়দার আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ ‘— পঙক্তিমালার স্রষ্টা নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বয়স্ক নিরাময় কেন্দ্রে মৃত্যু হয় ৭৩ বছর বয়সী এই কবির।

তার ভাতিজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার বলেন, স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২০ মিনিটে মারা গেছেন চাচা। বিস্তারিত পরে আমরা জানাতে পারব।

বার্লিনে কবির অত্যন্ত স্নেহভাজন, সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পী মাইন চৌধুরী পিটু জানান, কবি দাউদ হায়দার গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অসুস্থতাজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। বেশ কয়েকমাস জার্মানির বেশ কয়েকটি হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে কবির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তার মরদেহ বার্লিনেই দাফন করা হবে। তবে তার শেষ বিদায় কোথায় এবং কখন হবে; তা দেশে থাকা কবির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং বার্লিনে তার সকল ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

কবির ছোট ভাই জাহিদ হায়দার জানান, ১২ ডিসেম্বর বার্লিন শহরের বাসার সিঁড়িতে পড়ে যান দাউদ হায়দার। আহত হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সেখানে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন অনেক দিন। তিনি বলেন, তারপর ধরা পড়ে কোলন ক্যানসার। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা কেমো দেওয়ার মতো ছিল না বলে অন্য চিকিৎসা চলমান ছিল। সেইসঙ্গে বয়সজনিত নানা জটিলতা তো ছিলই। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।

১৯৭৪ সালে দেশ ছাড়ার পর কয়েকবছর কলকাতায় কাটিয়ে ১৯৮৭ সালে সেখান থেকে জার্মানিতে চলে যান দাউদ হায়দার। এরপর থেকে সেখানেই ছিলেন তিনি।

চিরকুমার দাউদ হায়দার আগে থেকেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গতবছর ডিসেম্বরে বার্লিনের বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় আঘাত পান। সে সময় তাকে হাসপাতালের আইসিইউতেও নিতে হয়। এরপর হাসপাতাল ছাড়লেও আর সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেননি দাউদ হায়দার।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাবনায় দাউদ হায়দারের জন্ম। তিনি একাধারে কবি, লেখক এবং সাংবাদিক। ১৯৭৪-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় তার কবিতা ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ প্রকাশিত হলে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগে তার বিরূদ্ধে মামলা হয়। তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে ১১ মার্চ তাকে আটক করে পুলিশ। ২০ মে মুক্তি দেওয়া হলেও কবিকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি তখনকার সরকার। পরদিন সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে একপ্রকার খালি হাতে কলকাতায় পাঠানো হয়।

কবি লিখেছিলেন, সে সময় তার কাছে ছিল মাত্র ৬০ পয়সা, কাঁধে ঝোলানো একটি ব্যাগে ছিল কবিতার বই, দুজোড়া শার্ট, প্যান্ট, স্লিপার আর টুথব্রাশ। তিনি বলেন, আমার কোনো উপায় ছিল না। মৌলবাদীরা আমাকে মেরেই ফেলত। সরকারও হয়তো আমার মৃত্যু কামনা করছিল।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বগুড়ায় একরাতে চার সন্তান জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী

বগুড়ার একটি হাসপাতালে একসঙ্গে চার পুত্র সন্তানের জ...

নীলফামারীর ডিসির মানবিক উদ্যোগ; খোলা হলো রক্তদানে ‘হিমোগ্লোবিন’

‘মানবতার শ্রেষ্ঠ দান, রক্ত দিয়ে বাঁচাই প্রাণ’ শ্লোগানে নীলফামারীত...

জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তির মেয়ের মরদেহ উদ্ধার

জুলাই আন্দোলনে নিহত ব্যক্তির কলেজছাত্রী মেয়ের (১৮)...

সন্তানকে ফিরে পেতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাবেক ছাত্র মো. সাইফ...

সাত খুনের রায় কার্যকরের অপেক্ষায় স্বজনরা

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় ১১ বছর পূর্ণ হ...

কুলাউড়ায় আবাসিক হোটেল থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পৌর শহরের আজাদ বোর্ডিং নামের একটি আবাসিক হোটেল থেকে ফসি...

মেধাবী জাতি গঠনে ডিম এবং দুধের ভূমিকা অপরিহার্য

‘প্রাণীর স্বাস্থ্য রক্ষায় দলগত প্রচেষ্টা দরকার’ এই প্রতিপাদ্যকে...

ভালুকায় পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধনে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন

পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর ভালুকা গড়ার লক্ষ্যে ভালুকা উপজে...

গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ গার্মেন্টস কর্মীর মৃত্যু

গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার মোগরখাল এলাকায় গ্যাস সি...

পোপ নির্বাচিত হন যেভাবে 

রোমান ক্যাথলিক চার্চের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব বেছে নিতে র...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা