নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতাবিরোধীদের মুক্তিযোদ্ধা বানানো ও নকল মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের সকল কার্যক্রম অবৈধ ঘোষণাসহ ৭ দফা দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটি বিক্ষোভ মিছিল ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ঘেরাও কর্মসূচি করেছে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ দাবি ঘোষণা করে তারা বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বলেন, বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে প্রণীত মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি ও বেইজ্জতিকারী জামুকার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাদের বিচার দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে করতে হবে।
সেলিম রেজা বলেন, শিগগিরই আমরা দেশব্যাপী সকল নকল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন ও তা জনসম্মুখে প্রকাশ করবো। যেসব প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা আবেদন করতে পারেনি তাদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে।
সরকারি, আধা-সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির প্রায় ১০০ সদস্য এ সময় ঘেরাও কর্মসূচি নিয়ে প্রেস ক্লাব থেকে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ভবন অভিমুখে পদযাত্রা করেন।
৭ দফা দাবি সমূহের মধ্যে রয়েছে-
১) অ-মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাবিরোধীদের মুক্তিযোদ্ধা বানানো জাল মুক্তিযোদ্ধা কারখানা জামুকার কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২) বঙ্গবন্ধু সরকার আমলে প্রণীত মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দিতে হবে।
৩ ) বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি ও বেইজ্জতিকারী জামুকার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা - কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাদের সকল দুর্নীতির বিচার দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে করতে হবে।
৪) বিশেষ কমিশন গঠনের মাধ্যমে দেশব্যাপী মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিসমূহের অনৈতিক কার্যক্রমের বিচার এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই প্রকাশ্য জনসম্মুখে সম্পন্ন করতে হবে।
৫) জামুকা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যবধি জামুকা কমিটিতে মনোনীত জাল/নকল মুক্তিযোদ্ধা ও অ-মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের সকল কার্যক্রম অবৈধ ঘোষণা করে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৬ ) অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে এবং যাচাই-বাছাইয়ে যেসকল মুক্তিযোদ্ধাদের অনৈতিক কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
৭ ) নিবন্ধিত সংগঠন ও তাদের গঠনতন্ত্রে অনুমোদীত অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ব্যতীত অনিবন্ধিত সংগঠনসমূহের সকল কার্যক্রম অবৈধ ঘোষণা করে অনতিবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
এসময় দাবি আদায়ে নিম্নলিখিত কর্মসূচিসমূহ ঘোষণা করেন-
১ ) ৩০ লক্ষ শহীদ, ২ লক্ষাধিক মা-বোনোর সম্ভ্রম ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগে অর্জিত বাংলাদেশ সুরক্ষায় দেশব্যাপী " বাংলাদেশ সুরক্ষা আন্দোলন " শিরোনামে গণ সমাবেশ করা হবে।
২ ) দেশব্যাপী সকল নকল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন ও তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
৩ ) যে সকল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা আবেদন করতে পারে নাই তাদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে।
৪ ) যাচাই-বাছাইয়ের নামে অনৈতিকভাবে যেসকল প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের তালিকা প্রণয়ন ও প্রকাশ করা হবে।
৫ ) সরকারী, আধা-সরকারী, বেসরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে এবং কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত জাল মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের তালিকা প্রণয়ন পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনী আশ্রয় নেওয়া হবে।
এবি/এইচএন