ক্রীড়া ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন টেস্ট ম্যাচ জিতেছিল শামার জোসেফ তখন পৃথিবীর আলো দেখেননি। সেই জোসেফের হাত ধরেই ১৯৯৭ সালের পর আবারও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে রূপকথা লিখলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরতে পরতে উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে ৮ রানে জিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২৭ বছর পর টেস্ট ম্যাচ জিতলো ক্যারিবীয়রা।
ম্যাচ লড়াই হয়েছে রুদ্ধশ্বাস। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একপ্রান্ত আগলে পড়ে ছিলেন ওপেনার স্টিভ স্মিথ। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত নিজেকে জিইয়ে রেখেছিলেন নায়ক হবেন বলে। তবে জশ হ্যাজেলউড অসহায় হয়ে পড়লেন জোসেফের গতির সামনে। হ্যাজেলউডের উইকেটটি নিয়েই উড়তে শুরু করলেন আগের দিন ব্যাটিংয়ের সময় ডান পায়ের আঙুলে চোট পাওয়া জোসেফ। ইনিংসে নিলেন ৬৮ রানে নিয়েছেন ৭ উইকেট।
অ্যাডিলেডে সিরিজের প্রথম টেস্টে তিন দিনের মধ্যে হেরে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্রিসবেনে দিবারাত্রির ম্যাচটিতেও সহজেই হেরে যাবে বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। প্রথম ইনিংসে ৩১১ রানে অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু কেমার রোচ আর আলজারি জোসেফের অসাধারণ বোলিংয়ের পর অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেটে ২৮৯ রান তুলে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১৯৩ রানে, অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় ২১৬। ২ উইকেটে ৬২ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করা অস্ট্রেলিয়া জয়ের পথেই ছিল। কিন্তু আজ চতুর্থ দিনে ৬৮ রানে ৭ উইকেট নিয়ে জোসেফ পাশার দান উল্টে দেন। ম্যাচ এবং সিরিজ সেরাও হয়েছেন নাইটগার্ড থেকে জীবনের বাক বদল দেখা জোসেফ।
২ উইকেটে ৬২ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করা অস্ট্রেলিয়া জয়ের পথেই ছিল। চতুর্থ দিনেও শুরুটা ভালোই করেছিল অস্ট্রেলিয়া। পঞ্চাশ পার হয়ে বিনা উইকেটে ৯৩ পর্যন্ত গিয়েছিল। এই সময়ই জুয়াটা খেললেন ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। বল তুলে দিলেন শামারের হাতে। প্রথম ওভারে ১০ রান দিলেও পরের ওভারে দিলেন আস্থার প্রতিদান, ফেরালেন গ্রিন ও হেডকে।
ওই যে শুরু করলেন, শামার আর থামেননি। রাতের খাওয়ার বিরতির আগে টানা ১০ ওভার বোলিং করেছেন। তুলে নিয়েছেন ৬ উইকেট। শামারের তাণ্ডবের মাঝেও ভরসা হয়ে একপ্রান্ত আগলে ছিলেন স্মিথ। শেষ পর্যন্তও তেমনই ছিলেন, ১৪৬ বলে ৯১ রানে অপরাজিত। কিন্তু হার এড়াতে পারেননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ; প্রথম ইনিংস ৩১১ ও ২য় ইনিংস ১৯৩
অস্ট্রেলিয়া: প্রথম ইনিংস ২৮৯/৯ (ডিক্লেয়ার) ও ২য় ইনিংস২০৭
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ রানে জয়ী।
সিরিজ: ১–১ ড্র
ম্যাচ ও সিরিজ সেরা: শামার জোসেফ
এবি/এইচএন