বিনোদন ডেস্ক: বরেণ্য অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর। তার অভিনয় ও নাচের জাদুতে মুগ্ধ অসংখ্য অনুরাগী। ৬৯ বছর বয়সী মমতা এখনো ঐতিহ্যগত ভাবনা সযত্নে লালন করেন। কিছু দিন আগে বর্তমান প্রজন্মের মেয়েদের শাড়ি পরা নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দেন এই শিল্পী। বলা যায়, রীতিমতো তোপের মুখে পড়েন।
মমতা শঙ্করের বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চায় পরিণত হন। অনেকে মমতা শঙ্করকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী বলে মন্তব্য করেন। কেউ কেউ বলেন, যৌনকর্মীদের অপমান করা হয়েছে। আবার অনেকে মমতা শঙ্করের মন্তব্যকে সঠিক বলে মনে করছেন। আবার শ্রীলেখা মিত্র যেমন স্বপক্ষে বক্তব্য দেন, তেমনি স্বস্তিকা মুখার্জি অনেকটা আক্রমণ করে মন্তব্য করেন।
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ, ট্রল হলেও এতদিন নীরব ছিলেন মমতা শঙ্কর। কলকাতার টলি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নীরবতা ভাঙলেন এই অভিনেত্রী। মমতা শঙ্কর বলেন, ‘আমার কিচ্ছু গায়ে লাগছে না। এত লোক আমাকে সাপোর্ট করেছেন, তাই আমি ওসব ভাবছি না। যারা ওইরকম ভাষা দিয়ে ওইরকমভাবে আমাকে ট্রল করেছেন। তারা নিজেদের ছোট করলেন আর কিছু নয়।’
স্বস্তিকা একটি ডিজিটাল স্কেচ ফেসবুকে শেয়ার করে নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছিলেন। ক্যাপশনে স্বস্তিকা লেখেছিলেন, ‘দারুণ হয়েছে। আমিও এরকম একটা ছবি তুলব, ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়ানো খারাপ মেয়েগুলোকে উৎসর্গ করে। শাড়ির আঁচলেই কিনা সব সম্মান লুকিয়ে আছে যদি ওরা জানতো।’ স্বস্তিকার এই মন্তব্য পড়েছেন মমতা।
এ বিষয়ে মমতা শঙ্কর বলেন, ‘স্বস্তিকা যেরকমভাবে বলেছে! ও আমার মেয়ের মতো। ওকে আমি এত ভালোবাসি। ও এত ভালো অভিনেত্রী। ও সোজাসুজি আমার সামনে এসে কথাটা বললে আমার আপত্তি ছিল না। কিন্তু ও যেভাবে একটা ছবি দিয়ে নিজের অবস্থান জানালো, তাতে ও নিজেকে ছোট করল। আমি যেটা বলেছি আমি তাতে অনড়, আমার কথা এদিক ওদিক হবে না।’ সবার উদ্দেশ্যে মমতা শঙ্কর বলেন, ‘সব্বাইকে বলব, দয়া করে আমার কথাটা আরেকবার শুনুন। তাদেরকে (যৌন কর্মীদের) কীভাবে শ্রদ্ধা দিয়ে কথা বলেছি তা শুনুন।
আশা করি, তাহলে আমাকে ভুল বুঝবেন না।’ শাড়ির আঁচল নিয়ে মমতা শঙ্কর ঠিক কী বলেছিলেন? মমতা শঙ্কর বলেছিলেন, ‘আমি শাড়ি পরব কিন্তু আঁচলটা জায়গামতো থাকবে না, এই ভাবনাটা বুঝতে পারি না। ক্ষমা করবেন, এটা বলছি বলে— যাদের আমরা রাস্তার মেয়ে বলতাম, যারা ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে থাকে এমন মেয়ে বলতাম, তারা এরকমভাবে দাঁড়াত। কিংবা গ্রামে কাজ করতে গিয়ে আঁচল সরে গেল সেটা দোষের ছিল না। এরা মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন, এটা তাদের পেশা, আমি তাদেরও শ্রদ্ধা করছি।’
এবি/এইচএন