ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসরোর সবচেয়ে অত্যাধুনিক যোগাযোগ স্যাটেলাইট ‘জিস্যাট-এনটু’কে মহাকাশে পাঠিয়েছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ফ্লোরিডার ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে স্পেস এক্সের রকেট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে পৃথিবীর কক্ষপথে এই স্যাটেলাইট পাঠানো হয়।
এই প্রথম ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার কোনো কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাল মার্কিন সংস্থাটি। স্পেস এক্সের ফ্যালকন ৯ রকেটে করে ভারতীয় উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতজুড়ে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা এবং উড়ানে ইন্টারনেটের সংযোগ আরও উন্নত করতেই অত্যাধুনিক জিস্যাট-এন২ উপগ্রহটি মহাকাশে পাঠানো হয়েছে।
স্পেস এক্সের মাধ্যমে জানানো হয়, সফলভাবে মহাকাশে নিজের গন্তব্যে পৌঁছে গেছে ভারতীয় স্যাটেলাইট। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং স্পেস এক্সের মধ্যে একাধিক বাণিজ্যিক সহযোগিতার চুক্তি হয়েছে। তারই সর্বপ্রথম নিদর্শন এই জিস্যাট-এন২ স্যাটেলাইট লঞ্চ।
প্রসঙ্গত, এই জিস্যাট-এন২ উপগ্রহটির ওজন ৪ হাজার ৭০০ কিলোগ্রাম। এই উপগ্রহের মাধ্যমে সহজেই বিপুল পরিমাণ ডেটা ট্রান্সফার করা যাবে। প্রায় ৪৮ জিবি প্রতি সেকেন্ডের গতিতে সেই কাজ করা যাবে এই স্যাটেলাইটের সুবাদে। এই উপগ্রহে একাধিক ‘বিম’ রয়েছে। যার মাধ্যমে একইসঙ্গে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিষেবা প্রদান করা সম্ভব হবে। ভারতের স্মার্ট সিটি মিশনে এই উপগ্রহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ইসরোর এই জিস্যাট-এন২ স্যাটেলাইটটি সিএফআরপি নির্ভর কাঠামো, একাধিক লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি এবং একটি উন্নত মানের এওসিএস সিস্টেম। এই উপগ্রহটি প্রায় ১৪ বছর ধরে মহাকাশে থেকে কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে। কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশনের স্পেস লঞ্চ কমপ্লেক্স ৪০ থেকে এই উপগ্রহটি লঞ্চ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট ‘লঞ্চ ভেহিকল মার্ক ৩’। তবে সেটি মাত্র ৪ হাজার কেজি ওজনের কৃত্রিম উপগ্রহ পৃথিবীর কক্ষপথে বয়ে নিয়ে যেতে পারে। জিস্যাট-এন২ স্যাটেলাইটের ওজন তার থেকেও বেশি ছিল। এই আবহে এই স্যাটেলাইট লঞ্চের জন্যে মার্কিন সংস্থার সাথে হাত মেলায় ইসরো।
চার হাজার ৭০০ কেজি ওজনের স্যাটেলাইটটি ৪৮ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) গতিতে ডাটা আদান-প্রদান করতে পারে। এটি একই সঙ্গে ফ্লাইট চলাকালীন সময় উড়োজাহাজে ইন্টারনেট সেবা দেবে। স্পেস এক্সের ফ্যালকন নাইন রকেটের মাধ্যমে এই স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরো।
ইসরোর বাণিজ্যিক শাখা নিউ স্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাধাকৃষ্ণান দুরাইরাজ বলেন, একটি সুনিদির্ষ্ট কক্ষপথে জিস্যাট এনটু (জিস্যাট ২০ নামেও পরিচিত) স্যাটেলাইটটিকে বসানো হয়েছে। এই স্যাটেলাইট ১৪ বছর কার্যকর থাকবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারতের স্মার্ট সিটি মিশনের অংশ হিসেবে যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন ও উচ্চগতিতে ডাটা আদান-প্রদানের চাহিদা মেটাবে এই স্যাটেলাইট ও এই সিরিজের পরবর্তী স্যাটেলাইটগুলো।
.
আমার বাঙলা/এসএইচ