মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান
জাতীয়

সেনাবাহিনী কতদিন মোতায়েন থাকবে সে সিদ্ধান্ত সরকারের: সেনাসদর

আমার বাঙলা অনলাইন

বর্তমান পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী কতদিন মাঠে থাকবে, অন্তর্বর্তী সরকারই তা নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছে সেনা সদর।

'ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার' এর আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বাহিনীর এ অবস্থান তুলে ধরেন।

সেনানিবাসের বনানী রেল ক্রসিং সংলগ্ন স্টাফ রোডের মেসে এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় নিয়োজিত রয়েছে। “সেনাবাহিনী ডিপ্লয় হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে। সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে সেনাবাহিনী কতদিন মোতায়েন থাকা প্রয়োজন।"

গত জুলাই মাসে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সহিংস রূপ পেলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি কারফিউ জারি করা হয়।

৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর সেনাবাহিনী আর ব্যারাকে ফিরে যায়নি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, মানবাধিকার লংঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে সেনাবাহিনী ‘অত্যন্ত সচেতন’।

"এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকে নির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে, সেনাবাহিনী যে কোনো পরিস্থিতিতে তা প্রতিরোধে করবে।"

তিনি বলেন, অনেক ঘটনাই ঘটে গেছে, যেগুলো জনসম্মুখে আসে না। “ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টরে এ পর্যন্ত ছয়শর বেশি আনরেস্ট হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো ভায়োলেন্ট ছিল। অন্যান্য বাহিনীর সহায়তা নিয়ে এগুলো যদি সময়মত প্রতিরোধ বা শান্ত করার ব্যবস্থা না করা হত, তাহলে অনেক বেশি ঘটনা ঘটতে পারত।"

সেনা সদস্যরা এক ব্যক্তিকে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন– এমন একটি ভিডিওর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, "পরিস্থিতির প্রয়োজনে অনেক কিছু করতে হয়, তবে সেনাবাহিনী টার্গেট করে কাউকে মেরেছে এমন কোনো ঘটনা হয়নি।"

পুলিশের কাছে অপরাধের যেসব তথ্য থাকে, সেগুলো নিয়েও সেনাবাহিনী কাজ করছে বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা।

তিনি দাবি করেন, সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পাওয়ার পর অপরাধের সংখ্যা ‘অনেক কমেছে’।

"আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়নি, তবে যতটুকু আশা করা গেছে সে অনুযায়ী উন্নতি হয়নি। পুলিশ বাহিনী ধীরে ধীরে তাদের কার্যক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে। অন্যান্য বাহিনীর সহায়তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।"

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, গুলশানে একজন মেজরের সঙ্গে একজন পুলিশ কর্মকর্তার ঘটনাটি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ থেকে হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক ‘খুবই ভালো’।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্যই সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

"জনগণের জানমাল, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ সরকারি বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাকে রক্ষা করার পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীকে পুনরায় কার্যক্ষম হতে সহায়তা করে আসছে সেনাবাহিনী।"

বিদেশি কূটনীতিক, দূতাবাস ও কারখানার নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার কাজটিও সেনাবাহিনী করছে বলে জানান তিনি।

অপরাধ দমন, অপরধীদের গ্রেপ্তার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে জানিয়ে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, “এ পর্যন্ত ৬ হাজারের বেশি অস্ত্র, ২ লাখ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আড়াই হাজার ব্যক্তিকে।

“দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে ছয়শর বেশি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং কারখানাগুলোকে চালু করতে সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ করা হচ্ছে।”

তিনি তথ্য দেন, গত দুই মাসে সাতশর বেশি বিভিন্ন ধরনের ‘বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি’ নিয়ন্ত্রণ করেছে সেনাবাহিনী। এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ঘটনা ছিল ১৪১টি, সরকারি সংস্থা/ অফিস সংক্রান্ত ঘটনা ছিল ৮৬টি, রাজনৈতিক দলের ঘটনা ছিল ৯৮টি।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে পাওয়া ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা যেন ‘সুষ্ঠুভাবে এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে’ প্রয়োগ করা হয়, সে বিষয়ে সেনাবাহিনী সতর্ক আছে বলে জানান কর্নেল ইন্তেখাব।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ৬২ জেলায় সেনা সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে সহায়তা করছে। বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন সময়ে আহত ৩২৯৫ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ৪৩ জন চিকিৎসাধীন আছেন।

আমার বাঙলা/এনবি

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

নওগাঁয় গাছের হাট নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের ঔদ্ধত্যতা

নওগাঁয় সপ্তাহের প্রতি বুধবার বসা গাছের হাটের জায়গা...

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে নেই কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে আসা লক্ষাধিক রোহিঙ্গা...

আইপিএলে ১৩ ক্রিকেটারের নাম পাঠালো বিসিবি

পরবর্তী আরও তিনটি মৌসুমের আইপিএলের জন্য ১৩ ক্রিকেট...

নাগরিক সেবা পেতে চরম দুর্ভোগে রাজধানীরবাসী

নাগরিক সেবা পেতে চরম দুর্ভোগে রাজধানীর দুই সিটি ক...

পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা-বেনাপোল ট্রেন চলাচল শুরু ২ ডিসেম্বর

পদ্মাসেতু হয়ে বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা-যশোর-খুলনা-বেনা...

অক্টোবরে সারা দেশে ৪৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৫ জন

গেল অক্টোবর মাসে সারা দেশে ৪৫২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছ...

দেশের ৬১ শতাংশ মানুষ চান আগামী এক বছরের মধ্যে নির্বাচন হোক

দেশের ৬১ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ আগামী এক বছরের মধ্যে...

লেবাননে এক দিনে নিহত ৫৯

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দক্ষিণ লেবানন জুড়ে হামলা...

ঝিনাইদহে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১

ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ...

পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু 

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা