সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
সংগৃহীত
নারী প্রকাশিত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:৫১
সর্বশেষ আপডেট ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:৫১

‘সুপারমম’ র‌্যাচেল কৌর

আমার বাঙলা ডেস্ক

কথায় আছে- সন্তানের জন্য মায়েরা পারেন না, এমন কোনো কাজ নেই। তাই বলে প্রতিদিন ৭০০ কিলোমিটার বিমানে ভ্রমণ করে অফিস করা আবার বাড়ি ফেরা! শুনতে অস্বাভাবিক হলেও এটিই সম্ভব করেছেন মালয়েশিয়ার ৪২ বছর বয়সী এক মা, র‌্যাচেল কৌর। নেটিজেনরা তাকে দিয়েছেন ‘সুপারমম’ তকমা।

ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠে সংসার গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েন র‌্যাচেল কৌর, বিমানবন্দরে গিয়ে বিমানে ওঠেন অফিসের জন্য। অতঃপর কর্মদিবস শেষে সন্ধ্যা নাগাদ ফ্লাইটে করে ফিরে আসেন দুই সন্তানের কাছে, এটিই তার প্রতিদিনের রুটিন। কর্মজীবন ও পরিবার— দুটোই সামলানোর অসাধারণ ক্ষমতার জন্য তিনি ‘সুপার কমিউটার’ নামেও পরিচিতি পেয়েছেন।

র‌্যাচেল কৌর মালয়েশিয়ার বিমান কোম্পানি এয়ার এশিয়ার সহকারী অর্থ ব্যবস্থাপক, থাকেন পেনাংয়ে, কিন্তু কাজ করেন রাজধানী কুয়ালালামপুরে। শুরুর দিকে তিনি কাজের সুবিধার্থে কুয়ালালামপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে সপ্তাহান্তে বাড়ি ফিরতেন। কিন্তু সন্তানদের থেকে দূরে থাকার কারণে কাজে ঠিকঠাক মন বসাতে পারছিলেন না। সন্তানদের প্রতিদিনের জীবন, স্কুলের কার্যক্রম এবং ছোট ছোট মুহূর্ত মনে করে র‌্যাচেল বেশ কষ্ট পেতেন। সন্তানদের বেড়ে ওঠার সুন্দর মুহূর্তগুলো হারাতে চাননি। তাই একটা সাহসী পদক্ষেপ নেন। সিদ্ধান্ত নেন, পরিবারের সঙ্গে থাকার জন্য প্রতিদিন বিমানে করে অফিসে যাতায়াত করবেন। সপ্তাহে পাঁচ দিন বিমানে যাতায়াতের খরচ নিশ্চয়ই আকাশছোঁয়া। আদতে তা নয়।

র‌্যাচেল জানান, আগের তুলনায় তার খরচ বরং অনেকটাই কমে গেছে। কুয়ালালামপুরে বাসা ভাড়া ও থাকা-খাওয়া বাবদ প্রতি মাসে ব্যয় করতেন ৪৭৪ ডলার বা দুই হাজার ১০৬ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত। আর এখন তার মাসিক খরচ কমে হয়েছে ৩১৬ ডলার বা ১ হাজার ৩৯৬ রিঙ্গিত।

যেখানে বেশির ভাগ মানুষ কর্মক্ষেত্রে পৌঁছানোর জন্য দীর্ঘ যানজট নিয়ে অভিযোগ করেন, সেখানে র‌্যাচেল দৈনিক ৭০০ কিলোমিটার আকাশপথ পাড়ি দেন এবং তিনি মনে করেন, সন্তানদের হাসিমুখের কাছে এটি কোনো কষ্টই নয়। এই রুটিন বজায় রাখতে শুধু শারীরিক সক্ষমতাই নয়, দরকার অসীম মানসিক শক্তির। র‌্যাচেলের জন্য এই যাত্রা ক্লান্তিকর হলেও মূল্যবান।

এক সাক্ষাৎকারে র‌্যাচেল বলেন, ‘আমার দুই সন্তান, একজন ১২ বছরের, আরেকজন ১১ বছর বয়সী। তারা বড় হচ্ছে, তাই একজন মা হিসেবে ওদের সঙ্গে আরো বেশি সময় থাকা দরকার। বিমানে নিয়মিত যাতায়াত করে প্রতিদিন বাড়ি ফিরে যেতে পারছি, রাতে ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারছি, এমনকি শেষ মুহূর্তের বাড়ির কাজেও আমার সন্তানদের সাহায্য করতে পারছি।’

র‌্যাচেলের গল্প হাজারো কর্মজীবী মা-বাবার হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে, যারা পেশা ও পরিবারের মধ্যে ভারসাম্য খুঁজে পেতে লড়াই করছেন। র্যাচেল দেখিয়েছেন, পেশাজীবন ও কাজ গুরুত্বপূর্ণ হলেও পরিবারের প্রতি ভালোবাসার কাছে তা মামুলি। তিনি প্রমাণ করেছেন, কঠিন হলেও ইচ্ছা থাকলে পেশা ও পরিবারকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব।

তার গল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সবাই পরিবারের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি ও ত্যাগ দেখে অভিভূত। প্রত্যেক কর্মজীবী মা-বাবার কাছে তিনি এখন এক অনুপ্রেরণার নাম। র‌্যাচেল প্রমাণ করেছেন, দৃঢ়সংকল্প থাকলে ভালোবাসার কাছে কোনো দূরত্ব বাধা নয়। সূত্র: মিডিয়াম ডটকম।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বিএনপি ক্ষমতায় এলে মন্দিরে হামলারও বিচার হবে: মোশারফ হোসেন

বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও জাত...

কটিয়াদীতে সুপেয় পানির তীব্র সংকট, টিউবওয়েলে উঠছে না পানি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলাতে হস্তচালিত টিউবওয়েল...

বার কাউন্সিলের এমসিকিউ পরীক্ষা ২৫ এপ্রিল

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির (এনরোলমেন্ট) এমসিকিউ পরীক্ষার ত...

বৈশাখে পান্তা-ইলিশ বাংলা সংস্কৃতির অংশ না: উপদেষ্টা ফরিদা 

অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, পহেলা বৈ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা