দ্বাদশ সংসদের সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা বাতিল হওয়ার পর গত পাঁচ মাসে মাত্র একজনই শুল্ক–কর দিয়ে একটি গাড়ি খালাস করেছেন। দুই দফা চিঠি দেওয়ার পরও আমদানি করা অন্য গাড়িগুলো খালাস নেননি সাবেক সংসদ সদস্যরা (এমপি)। এসব গাড়ির ২৪টি আগামী সপ্তাহে নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।
এসব গাড়ি আমদানিতে সাবেক সংসদ সদস্যরা ৯৫ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন। সব মিলিয়ে গাড়ি কেনা বাবদ সবাই মিলে খুইয়েছেন প্রায় ২৩ কোটি টাকা। এই টাকা তারা আর ফেরত পাচ্ছেন না। এখন কাস্টমস নিলামে তুলে বিক্রি করে যা পাবে, তা সরকারি কোষাগারে জমা হবে।
গাড়িগুলোর সংরক্ষিত মূল্য (শুল্ক–করসহ) ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছে কাস্টমস। প্রথম নিলামে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি সর্বোচ্চ দরদাতা এই গাড়ি কিনতে পারবেন। এই হিসাবে প্রতিটি গাড়ি কিনতে ন্যূনতম ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা দর দিতে হবে। ২৫ শতাংশ করসহ এই গাড়ির সর্বনিম্ন দাম পড়বে ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, সংসদ সদস্যের মেয়াদে শুল্কমুক্ত সুবিধায় খালাস হওয়া একেকটি গাড়িতে অগ্রিম আয়কর বাবদ ৪ লাখ ৮০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা রাজস্ব পেয়েছে সরকার। এখন প্রথম নিলামে বিক্রি করা গেলে একেকটি গাড়িতে সোয়া ৭ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। এ হিসাবে গাড়িগুলো থেকে ১৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের আশা রয়েছে।
সাইদুল ইসলাম জানান, আগামী রোববার থেকে সাবেক সংসদ সদস্যদের ২৪টি গাড়ি অনলাইন নিলামে তোলা হবে। আগ্রহী দরদাতারা এসব গাড়ি সরেজমিন দেখতে পারবেন ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি। নিলামপ্রক্রিয়া শেষ হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি। দেশের যেকোনো স্থান থেকে যে কেউ অনলাইনে এই নিলামে অংশ নিতে পারবেন।
কয়েকটি ছাড়া সাবেক সংসদ সদস্যদের গাড়িগুলো নতুন মডেলের। নতুন গাড়ি আমদানির অর্ডার (ঋণপত্র খোলার) দেওয়ার পরই গাড়ি নির্মাণ শুরু করেছিল জাপানের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা। ন্যূনতম তিন থেকে চার মাসে এসব গাড়ি তৈরি করা হয়। অর্থাৎ নিজেদের পছন্দমতো মডেলের গাড়ি আনার পর এখন তা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।
নিলামে যাদের গাড়ি তোলা হচ্ছে তাদের কেউ আত্মগোপনে, কেউ কারাগারে রয়েছেন। আত্মগোপনে থাকা একজন সাবেক সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এটা দুর্ঘটনা। গাড়ি কেনা বাবদ কোটি টাকা জলে গেল। এখন ৮ গুণ শুল্ক–কর দিয়ে খালাস করা অসম্ভব, অকল্পনীয় ব্যাপার। এ রকম বিলাসিতা সম্ভব নয়।’
আমারবাঙলা/জিজি