সাজু আহমেদ: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদরের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের শেষ আকুতি ছিল ‘আমি মায়ের কাছে যাবো’। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের যে বর্বরতম রাতে বঙ্গবন্ধুসহ তার পুরো পরিবার (দুই কন্যা ব্যাতিত) ও নিকট আত্মীয়দের হত্যা করা। সেই পুরো হত্যাযজ্ঞ শেখ রাসেল লুকিয়ে থেকে নিজ চোখে দেখেছিলেন। একে একে প্রাণের চেয়ে প্রিয় বাবা, মা, বড় দুই ভাই, ভাবীসহ আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুর আর্তনাদ শুনেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের মধ্যে সবশেষে ঘাতকদের শিকার হন শেখ রাসেল। তাকে হত্যার আগে রাসেলের শেষ দুটি বক্তব্য ছিল ‘আমি মায়ের কাছে যাবো’ আর ‘আমাকে হাসু আপার আছে দিয়ে আসো’। এই গল্প ইতিহাসের পাতায় থাকলেও ভিজ্যুয়াল প্রথমবারের মতো নির্মাণ করেন নাট্যকার সহিদ রাহমান। এবার সেই গল্প তিনি আরও বৃহৎ পরিসরে নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। টেলিফিল্মের নামকরণও করা হয়েছে ‘আমি মায়ের কাছে যাবো’।
রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে টেলিফিল্মটির নির্মাণে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর ও পোস্টার উদ্বোধন করা হয়। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকর সভাপতিত্বে এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, দৈনিক শুভ প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক সরওয়ার হোসেন। নাট্যকার সহিদ রাহমানের সঞ্চায়লনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টেলিফিল্মের নির্মাতা হাসান রেজাউল, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর প্রসূন রহমান, শেখ রাসেল চরিত্রের অভিনয়শিল্পী শিশুশিল্পী দিহান, বঙ্গমাতা চরিত্রের শিল্পী জনপ্রিয় অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি, শেখ কামাল চরিত্রের অভিনেতা ক্রিশ্চিয়ানো তন্ময় প্রমুখ।
নাট্যকার সহিদ রাহমান জানান, টেলিফিল্মটির শুটিং আগামী ১ মে থেকে শুরু হবে। এরপর ১৬ জুন ভারতের কলকাতা ও দিল্লীতে টেলিফিল্মটির প্রিমিয়ার শো হবে। এরপর ঢাকাতেও বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে সিনেমাটির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হবে। কেমন ছিল রাসেলের জীবনের ১০টি বছর? তার জীবন প্রবাহের সময়গুলো ফিরে দেখা আর সৃজনশীল আবহে পূণ:নির্মাণের চেষ্টা থাকবে ‘আমি মায়ের কাছে যাবো’ নামের এই ৯০ মিনিটের টেলিফিল্মে। ফ্রেম ফ্যাক্টরি নিবেদিত সহিদ রাহমানের ‘মহামানবের দেশে’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই টেলিফিল্মের ধরণ হবে বায়োগ্রাফিক্যাল/জীবনালেখ্য। বাকী চরিত্রগুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চরিত্রের সম্ভাব্য শিল্পী শাকিল আহমেদ, শেখ হাসিনা চরিত্রে সাদিয়া আয়মান, শেখ জামাল চরিত্রে শরীফ সিরাজ, শেখ রাসেলের গৃহ শিক্ষিকা গীতালি চরিত্রে তানজিকা আমিন এবং ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা চরিত্রে ডলি জহুর অভিনয় করবেন।
‘আমি মায়ের কাছে যাবো’ টেলিফিল্মের পরিচালক হাসান রেজাউল বলেন, কেমন ছিল রাসেলের জীবনের ১০টি বছর? কেমন ছিল তার বেঁচে থাকার দিনগুলো? তার জীবনপ্রবাহের সময়গুলো ফিরে দেখা আর এই টেলিফিল্ম সৃজনশীল আবহে পুনর্নির্মাণের চেষ্টা থাকবে। স্বাভাবিকভাবেই গল্পের ধারাবাহিকতায় উঠে আসবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাসহ পরিবারের অন্য সদস্যের কথা। আগামী ১ মে থেকে শুটিং শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। নিজের চরিত্রটি নিয়ে অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, এর আগে গৌতম কৈরীর ‘বঙ্গমাতা’ স্বল্পদৈর্ঘ্যে বঙ্গমাতার চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। চেষ্টা করব সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চরিত্রটিকে সুচারুভাবে উপস্থাপন করার’।