দেশে ঊর্ধ্বমুখী ভোজ্যতেলের বাজার। সম্প্রতি সয়াবিন তেলের সংকটও সৃষ্টি হয়েছিল। অনেকে বলছেন দাম বাড়ানোর জন্য তা কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করা। সর্বশেষ সয়াবিন তেলের দামও বাড়ানো হয়েছে। তার পরও কাটেনি সংকট।
এমন পরিস্থিতিতে দাম বেশি পাওয়ার আশায় সরিষা আবাদে ঝুঁকছেন নওগাঁর বরেন্দ্র জনপদের চাষিরা। জেলাটিতে এবার ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা সরিষা থেকে এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ফলন আশা করছে কৃষি বিভাগ।
নওগাঁর বরেন্দ্র জনপদ মান্দা, আত্রাই, পত্নীতলা ও নওগাঁ সদরের হাসাইগাড়ী বিল এলাকায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শোভা ছড়াচ্ছে নান্দনিক সরিষার ক্ষেত। হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ। যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ।
হলুদের গালিচায় মোড়ানো সরিষা ক্ষেতে ফুলের ম ম গন্ধে সুবাস ছড়াচ্ছে মাঠের পর মাঠজুড়ে। হিমেল বাতাসে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্য। এ যেন এক হলদে রাজ্যের অপরূপ সৌন্দর্য। দেখেই মনে হয় হলুদ বরণে সেজেছে প্রকৃতি।
আমন ধান কাটার পর বাড়তি ফসল হিসেবে সাধারণত সরিষা আবাদ করেন চাষিরা। খরচ কম লাভ বেশি- এমন ফসলের মধ্যে সরিষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন বরেন্দ্র জনপদের চাষিরা। তাই এবার বাড়তি লাভের আশায় বাড়িয়েছেন চাষের পরিধিও।
নওগাঁর মান্দা উপজেলার কৃষকরা জানান, এবার বাড়তি জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। বাজারে তেলের দাম বেশি, তাই এবার সরিষার ভালো দাম পাওয়ার আশা তাদের।
ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণে সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহী করতে উন্নত জাত ও আধুনিক চাষের দিকনিদের্শনা দিচ্ছে কৃষি বিভাগও। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরিষা চাষিদের পাশে থেকে ভালো ফলন ঘরে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে; দেওয়া হচ্ছে নানা বিষয়ে পরামর্শ।
জেলার ১১ উপজেলায় অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রোপণ করা হয় সরিষা বীজ। বিনা-৫ ও বারি-৭ ছাড়াও উন্নতজাতের চার প্রকার সরিষার আবাদ করা হয় বরেন্দ্র এলাকায়। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এসব সরিষা ক্ষেত থেকে ফসল ঘরে তোলেন চাষিরা।
আমারবাঙলা/এমআরইউ