নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান সরকার ‘ভোট ডাকাতি’ করেছে উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এ সরকার ডাকাতদের সরকার। ওরা নিজেরাই ডাকাত, ভোট ডাকাতি করেছে। সরকার জনগণের অধিকার হরণ করে নিয়ে গেছে। এখন আবার বলছে, ভোট ভালো হয়েছে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার বলছে সবাই তাদের স্বীকৃতি দিচ্ছে। পিটার হাস না কি নেত্রীর সঙ্গে দেখা করে গেলো। কই পিটার হাস আর নেত্রী শেখ হাসিনার ছবি তো আমরা কোথাও দেখলাম না। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বরং বলেছে, অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যদিয়ে এই দেশ অগ্রসর হচ্ছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। সব ইউরোপীয় দেশগুলো তাই বলেছে। তারা (সরকার) শুধু ভোট জালিয়াতি করে নাই, এখন জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি নিয়েও জালিয়াতি করছে।
মান্না আরও বলেন, একজন প্রশ্ন করেছেন, কাপড়ের মধ্যে সই করলেই কি ওরা (সরকার) চলে যাবে? আরে ওদের তো পিছা দিয়ে পেটালেও যাবে না। যেতে চায় না। কিন্তু আমরাও এমন আন্দোলন করবো যে, যেতে হবে, তখন বাপের নাম ভুলে যাবে। তখন ফিরে দাঁড়িয়ে নিজের জন্য একবার দোয়াও করতে পারবে না। সেই পরিস্থিতি আসছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে এখানে আমাদের গণস্বাক্ষর কর্মসূচি দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে। এরপর কি আমাদের কর্মসূচি শেষ হয়ে যাবে? না, ২টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে, পরশু ২টা পর্যন্ত চলবে। এভাবে জানুয়ারি মাস শেষ হয়ে যাবে। তখন ফেব্রুয়ারি মাসে চলবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কাজ চলবে।
সরকার ভোট করেনি অভিযোগ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, এই নির্বাচনে ভোটার ছিল একজন। তিনি ৩০০ আসনে ভোট দিতে পারতেন, শেখ হাসিনা। উনি যাকে যাকে ভোট দিয়েছেন, উনিই জিতেছেন। বাকি কেউ জিততে পারেনি। এমন ভোট মানার কোনো প্রশ্ন আসে না। আমাদের সভা ভেঙে দিতে পারেন, নেতাদের গ্রেফতার করতে পারেন, গুম-খুন তো অনেক দিন চলেছে, আন্দোলন তো থামাতে পারেননি। পারবেনও না। আন্দোলন চলতেই থাকবে।
তিনি আরও বলেন, একজন মন্ত্রী বলেছেন, সাতদিনের মধ্যে সিন্ডিকেট বন্ধ করে দেবো। অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য কমাবে। সরকারের না কি এটা টপ প্রায়োরিটি। অথচ আজকে বাজারে চাল, পেঁয়াজ, লবণ কত করে? সব জিনিসের দাম বেশি। গ্যাসেরও দাম বেশি, চট্টগ্রামে গ্যাস নেই। আমি তো তোমার (সরকার) কাছে চাল, ডাল, তরকারি চাইনি। গ্যাস দেবে টাকা দিয়ে, সেই গ্যাস যদি দিতে না পারো, আমার যদি রান্নার চুলা না জ্বলে, ছেলেমেয়ে যদি অভুক্ত থাকে, তাহলে তুমি (সরকার) আছ কেন? লজ্জা করে না?
সবগুলো ব্যাংক বন্ধের দশা হয়েছে জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, টাকা নেই সরকারের কাছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তখন ছাপিয়ে ছাপিয়ে টাকা দিয়েছে। তারপর বাংলাদেশ ব্যাংক এক সময় বলেছে, এভাবে টাকা ছাপালে কাগজ হয়ে যাবে। অতএব বন্ধ করে দেই। এটা কোনো দেশ, এটা কোনো ব্যাংক, এটা কোনো অর্থনীতি? এই সরকারের জালিয়াতির বিরুদ্ধে সারাদেশের মানুষ এখন কাঁপছে। তারা বিক্ষোভে রাজপথে নামবে। আমরা সেই আহ্বান জানাই।
সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিপ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন, যারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, তারা একটু কষ্ট দেয়। তারা জনগণকেও কষ্ট দেয়, রাজনৈতিক দলগুলোকেও কষ্ট দেয়। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি করে, এগুলো সহ্য করেও আমরা টিকে আছি।
এবি/এইচএন