ক্রীড়া প্রতিবেদক: দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের বিশ্বরেকর্ড গড়া ম্যাচে শ্রীলংকাকে ১০২ রানে হারিয়ে ১৩তম ওয়ানডে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে প্রোটিয়ারা।
চলতি আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আজ কুইন্টন ডি কক-রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ও আইডেন মার্করামের সেঞ্চুরিতে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৪২৮ রানের পাহাড় গড়ে প্রোটিয়ারা। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রানের বিশ্বরেকর্ডের জন্ম দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
জবাবে ৩২৬ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা। একই সাথে ম্যাচে দুই দল মিলিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৭৪৮ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়ে।
বিশ্বকাপ ইতিহাসে এক ইনিংসে এই প্রথম তিন ব্যাটার সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড গড়েছে। সব মিলিয়ে ওয়ানডে ইতিহাসে চতুর্থবারের মত এক ইনিংসে তিন ব্যাটারের সেঞ্চুরি দেখলো বিশ্ব ক্রিকেট। ৪৯ বলে বিশ^কাপের ইনিংসে দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড গড়েন মার্করাম।
ভারতের নয়া দিল্লিতে অধিনায়ক তেম্বা বাভুমার সাথে ইনিংস শুরু করেন ডি কক। বাভুমা ৮ রানে থামলে দ্বিতীয় উইকেটে ডুসেনের সাথে ১৭৪ বলে ২০৪ রান যোগ করেন ডি কক।
শ্রীলংকার বিপক্ষে যেকোন উইকেটে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ রানের জুটি। এই জুটিতেই ৮৩ বলে ওয়াডেতে ১৮তম সেঞ্চুরি করেন ডি কক। সেঞ্চুরি করার পরের বলেই আউট হন ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮৪ বলে ১০০ রান করা ডি কক।
ডি কক ফেরার পর ১০৩ বলে ওয়ানডেতে পঞ্চম শতক পূর্ণ করেন ডুসেন। শেষ পর্যন্ত ১৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ১১০ বলে ১০৮ রান করেন তিনি।
ডি কক ও ডুসেন ফেরার পর শ্রীলংকার বোলারদের উপর তান্ডব চালিয়েছেন মার্করাম। মাত্র ৪৯ বলে ওয়ানডেতে তৃতীয় সেঞ্চুরি করেন তিনি। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম। আগেরটি ছিলো আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও’ব্রায়ানের। ২০১১ সালে ব্যাঙ্গালুরুতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন ও’ব্রায়ান।
বিশ^ মঞ্চে বিশ্বরেকর্ড গড়া ইনিংসে ১০৬ রান করেন মার্করাম। তার ৫৪ বলের ইনিংসে ১৪টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো।
এছাড়া হেনরিচ ক্লাসেনের ২০ বলে ৩২, ডেভিড মিলারের ২১ বলে অপরাজিত ৩৯ রানে ভর করে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে বিশ^কাপ ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ ৪২৮ রান সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি তিনবার ও ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ আটবার ইনিংসে ৪শ রানের রেকর্ডের মালিক দক্ষিণ আফ্রিকা।
শ্রীলংকার পক্ষে দিলশান মদুশঙ্কা ৮৬ রানে ২ উইকেট নেন। ব্যয়বহুল ছিলেন কাসুন রাজিথা ও মাথিশা পাথিরানা। রাজিথা ৯০ রানে ও পাথিরানা ৯৫ রানে ১টি করে উইকেট নেন।
৪২৯ রানের বড় টার্গেটে প্রথম ওভারেই খালি হাতে বিদায় নেন শ্রীলংকার ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। এরপর তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নামা কুশল মেন্ডিসের ঝড়ে ৬ ওভারে ৫৪ রান পায় লংকানরা। এই ৫৪ রানের মধ্যে ২৬ বলে ৫১ রান অবদান রাখেন মেন্ডিস। শেষ পর্যন্ত ৪২ বলে ৪টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৭৬ রানে আউট হন মেন্ডিস।
মিডল অর্ডারে লড়াই করেছেন চারিথা আসালঙ্কা। হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৯ রানে বিদায় নেন তিনি।
মেন্ডিস-আসালঙ্কার পর শ্রীলংকার পক্ষে হাফ-সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬২ বলে ৬৮ রানে থামেন। শেষ পর্যন্ত ৪৪ দশমিক ৫ বলে ৩২৬ রানে অলআউট হয় শ্রীলংকা। দক্ষিণ আফ্রিকার জেরাল্ড কোয়েৎজি ৩টি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
দক্ষিণ আফ্রিকা :
৪২৮/৫, ৫০ ওভার (ডুসেন ১০৮, মার্করাম ১০৬ ও ডি কক ১০০, মদুশঙ্কা ২/৮৬)
শ্রীলংকা :
৩২৬/১০, ৪৪.৫ ওভার (আসালঙ্কা ৭৯, মেন্ডিস ৭৬, শানাকা ৬৮, কোয়েৎজি ৩/৬৮)
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ১০২ রানে জয়ী।