শিক্ষিকার ব্যাগ থেকে টাকা হারিয়ে যাওয়ায় ঝিনাইদহে স্কুল শিক্ষার্থীদের চাল পড়া খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাল পড়া খাওয়ানোর ঘটনা ঘটলেও দুদিন পর গত বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঘটনাটি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় অভিভাবক ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ও অভিভাবকরা জানান, গত সোমবার দুপুরে পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ইমরানা খাতুন তৃপ্তির ব্যাগ থেকে ২ হাজার টাকা হারিয়ে যায়। তিনি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়াগায় টাকা খুঁজতে থাকেন। পরে টাকা না পেয়ে কবিরাজের কাছ থেকে চাল পড়া এনে শিক্ষার্থীদের খাওয়ানো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, ম্যাডামের ব্যাগ থেকে টাকা হারিয়ে যাওয়ায় তিনি চাল পড়া নিয়ে আসেন। পরে সেই চাল সব ছাত্র-ছাত্রীদের খাওয়ানো হয়। চাল পড়া খেয়ে একজন অসুস্থ হয়ে পড়ে।
অভিভাবক কানন বলেন, ‘শিক্ষিকার টাকা হারানোকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের যে চাল পড়া খাওয়ানো হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। একজন শিক্ষক হয়ে তার থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশা করি না।’
অভিভাবক স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার টাকা হারিয়ে গেলে তিনি জোরপূর্বক শিক্ষার্থীদের চাল পড়া খাইয়েছেন। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়ে যায়। অনেকেই ভয়ে স্কুলে যেতে চাইছে না। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় অভিভাবকরা খোঁজখবর নিতে স্কুলে গেলেও ওই শিক্ষিকাকে পাওয়া যায়নি।
শিক্ষিকা ইমরানা খাতুন তৃপ্তি বলেন, ‘আমার টাকা চুরি হয়েছে। অন্য সহকর্মীদের পরামর্শে শিক্ষার্থীদের চাল খাওয়ানো হয়েছে। তবে তা কবিরাজের কাছ থেকে পড়িয়ে আনা হয়নি। সাধারণ চাল খাওয়ানো হয়েছে। যেন শিক্ষার্থীরা সত্যটা বলে দেয়।’
পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ফজিলা পারভীন বলেন, ‘চাল খাওয়ানোর ঘটনা সঠিক, তবে সেটি কবিরাজের কাছ থেকে আনা কিনা জানি না।’ আপনি কেন চাল পড়া খাওয়ানো বন্ধ করলেন না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ কিশোর সাহা বলেন, এ ধরনের একটি খবর শুনেছি। ঘটনাস্থলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।