ঝিনাইদহের মোচিক বিদ্যালয়ের যৌন হায়রানির অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের দাবি, ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগের পর তাকে বিদ্যালয় থেকে বদলি করা হলেও তিনি আবার বিদ্যালয়ে ফিরে আসার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন।
জানা গেছে, ওই শিক্ষকের নাম জাকিরুল ইসলাম। তিনি বিদ্যালয়ে আইসিটি পড়াতেন। যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মোবারকগঞ্জ চিনিকল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বদলি হওয়ার পর আবারও স্বপদে ফিরে আসতে তিনি মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
দুইটি তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে স্কুল থেকে সরিয়ে আখ ক্রয় কেন্দ্রে বদলি করা হয়। এখন তিনি মোচিক স্কুলে ফেরার জন্য বিভিন্ন স্থানে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর মোচিক স্কুলের ছাত্রীরা লম্পট শিক্ষক জাকিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন।
এ ঘটনায় মোচিকের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) হিরণময় বিশ্বাসকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে জাকিরুল ইসলাম দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে গত ৮ সেপ্টেম্বর কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষক জাকিরুল ইসলাম কারণ দর্শানোর জবাব দেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর জাকিরুল ইসলামের জবাব যাচাই বাছাইয়ের জন্য মোচিকের ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) মাহফুজুল হককে প্রধান করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ওই কমিটি জাকিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত কমিটি সুপারিশ করলে কর্তৃপক্ষ সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করে তাকে একটি আখ ক্রয় কেন্দ্রে বদলি করে।
অথচ ওই আদেশের সময়কাল এক মাস পার হতে না হতেই লম্পট শিক্ষক জাকিরুল ইসলাম মোচিক স্কুলে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি বিভিন্ন মহলে তদবির করে মোচিক কর্তৃপক্ষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন। ছাত্রী অভিভাবকরা এই খবরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানিয়েছেন, যদি লম্পট শিক্ষক জাকিরুল ইসলাম আবারো মোচিক স্কুলে ফিরে আসে তবে তার দায় দায়িত্ব মোচিক কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষক জাকিরুল ইসলাম জানান, তিনি ক্লাসে একটি ছাত্রীকে চড় মেরেছিলেন। কোনো ছাত্রীর গায়ে হাত দেননি। এই বিষয়টি পুঁজি করে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হচ্ছে এবং স্কুল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। মোচিকের ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) মাহফুজুল হক জানান, আইসিটি শিক্ষক জাকিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুই তদন্ত কমিটি যৌন হয়রানির ঘটনা সত্য বলে রিপোর্ট দিয়েছে। এছাড়া স্কুলের প্রায় ৩০/৪০ জন ছাত্রী জাকিরুলের বিরুদ্ধে মৌখিক সাক্ষ্য ও লিখিত বক্তব্য দিয়েছে। কাজেই ঘটনাটি সত্য বলে তিনি জানান।