বাণিজ্য ডেস্ক: পণ্য রপ্তানিতে চলতি অর্থবছরের মে মাসে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি কমেছে ১৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। মে মাসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি কমেছে ২৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তৈরি পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়েছে।
বুধবার (৫ জুন) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সদ্য সমাপ্ত মে মাসে ৫৩৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এ মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪০৭ কোটি ৯ লাখ ডলারের। তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ কম। আগের বছর একই সময়ে পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ১৬ দশমিক শূণ্য ৬ শতাংশ।
এদিকে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ২৭ লাখ ডলারের। আগের বছর একই সময়ে পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৫ হাজার ৫২ কোটি ৭২ লাখ ডলারের।
তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দেশের মোট পণ্য রপ্তানির আয়ের ৮৫ শতাংশই আসছে পোশাক খাত থেকে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৭৪৭ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এ সময় আয় হয়েছে ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ৪ হাজার ২৬৩ কোটি ডলার। এক বছরের ব্যবধানে পোশাক রপ্তানিতে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে তৈরি পোশাক খাত। শুধু মে মাসে নিটওয়্যার পণ্যের প্রবৃদ্ধি ২০ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমেছে এবং ওভেন পোশাক রপ্তানি কমেছে ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি এবং তা নিয়ন্ত্রণে সুদ হার বৃদ্ধির ফলে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। ফলে, পোশাকের খুচরা বিক্রয় ও আমদানি কমেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি কমেছে ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ইউরোপে কমেছে ১২ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) জানিয়েছেন, ন্যূনতম মজুরি বৃ্দ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, ব্যাংক সুদ সিঙ্গেল ডিজিট থেকে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হওয়া এবং নগদ সহায়তা কমিয়ে আনার ফলে শিল্প প্রতিযোগিতা সক্ষমতার দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে পোশাক খাত। তার কিছুটা প্রতিফলন রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে ফুটে উঠেছে।
তিনি বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি। সে অনুযায়ী উদ্যেক্তারা নতুন পণ্যে বিনিয়োগ করছেন এবং নতুন বাজার তৈরিতে তৎপর আছেন। আমরা বিশ্বাস করি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয় ও অর্থনীতির কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধির স্বার্থে সরকার পোশাক খাতের জন্য বিকল্প ইনসেনটিভ প্রবর্তনের আগ পর্যন্ত চলমান সকল সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, রপ্তানির দ্বিতীয় বড় আয়ের উৎস চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৯৬ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ কম।
এবি/এইচএন