রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে মালচিং বা মাচা পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে কৃষকরা আশাতীত সাফল্য অর্জন করছেন। আধুনিক এই পদ্ধতিতে চাষ করে চাষীরা তিনগুণ বেশি লাভের আশা করছেন। তবে একই এলাকায় পুরনো পদ্ধতিতে চাষ করা কৃষকরা ফলন কম ও ক্ষতির আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর রাজবাড়ীতে ৬৪৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে চাষ হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা আশা করছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চরকর্নেশনা এলাকার চাষী মো. রুবেল শেখ জানিয়েছেন, ইউটিউব দেখে মালচিং পদ্ধতিতে দুই বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে তিন লাখ টাকা, যার মধ্যে তিনি ইতোমধ্যেই এক লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। তার প্রত্যাশা, এ জমি থেকে অন্তত ১০ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি হবে।
চাষী শফিক শেখ জানান, তিনি বিউটি প্লাস, সাতশত সাতান্না এবং বাহুবলী জাতের টমেটো চাষ করেছেন। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করার ফলে বৃষ্টি ও কুয়াশার ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তার টমেটো আকার ও রঙে ভালো হওয়ায় বাজারে সহজেই বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে রাজবাড়ীর বাজারে টমেটো ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে একই এলাকার ওসমান আলীর মতো কৃষকরা পুরনো পদ্ধতিতে চাষ করে বৃষ্টির কারণে গাছের ক্ষতি ও কুয়াশায় টমেটো পচে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন। ওসমান আলী জানান, ১৫ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করতে তার ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে ফলন ভালো না হওয়ায় তার পক্ষে মূলধন উদ্ধার করা কঠিন হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, "আধুনিক মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারে ফলন বৃদ্ধি ও রোগবালাই কম হয়। কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। চাষীরা যদি আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করেন, তাহলে তারা আরও লাভবান হবেন।