যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা আজ মঙ্গলবার যখন ভোট দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোট গণনার আগপর্যন্ত তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এতে কে জয়ী হচ্ছেন, তা জানতে কয়েক দিন পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন কর্মকর্তারা। মার্কিন ব্যবস্থায় নাগরিকদের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। নাগরিকদের ভোট ভাগ হয়ে যায় ৫৩৮টি নির্বাচক ভোটের মধ্যে। এই ভোটগুলোর বিন্যাস ঠিক করে দেয়, কে হবেন প্রেসিডেন্ট।
তবে এবারের নির্বাচনের লড়াই একেবারে শেষ সময় পর্যন্ত গড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞরা ভোটের ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ার আশঙ্কা করছেন। এ ছাড়া ভোট গণনা নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জের মতো জটিলতাও তৈরি হতে পারে। নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রায় ৮ কোটি ১০ লাখ ভোটার এরই মধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন।
ভোট গণনায় কত সময় লাগতে পারে
অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম ভোট গ্রহণ শেষ হবে ‘ইস্টার্ন টাইম’ সন্ধ্যা ছয়টায়। কিন্তু নির্বাচনী লড়াইয়ে দুই প্রার্থীর ভোট সমান হলে বিজয়ী নির্ধারণ করতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে। ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করেছিল ৭ নভেম্বর (শনিবার)। কিন্তু নির্বাচন শেষ হয়েছিল এর আগের মঙ্গলবার। ২০১৬ ও ২০১২ সালে অবশ্য ভোটারদের ফলাফল পেতে তুলনামূলক কম সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
ভোট শেষে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু ও ভোট গণনা করবেন। এসব কর্মকর্তাকে বাছাই বা নিয়োগ করা হয়। ভোট গণনার পদ্ধতি একেক জায়গায় একেক রকম। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্য ডাকযোগে ও দেশের বাইরে থেকে গৃহীত ভোট গণনার প্রক্রিয়া নিয়ে আইন পরিবর্তন করেছে। যদিও পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে এমন পরিবর্তন আনা হয়নি। এ দুই দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য দুই দলের জন্য জয়-পরাজয়ে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। অঙ্গরাজ্য দুটিতে ৫ নভেম্বরের আগে ভোট গণনার প্রক্রিয়া শুরু করার নিয়ম নেই। এতে সার্বিকভাবে ভোট গণনা ধীর হতে পারে। কোনো অঙ্গরাজ্যে ভোট সমান হলে সেখানে ভোট পুনর্গণনার প্রয়োজন হতে পারে।
যে কারণে ফলাফল ঘোষণায় দেরি হতে পারে
নির্বাচনে কংগ্রেসের সত্যায়ন একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এখন নির্বাচনী ফলাফলের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ২০২২ সালের (মধ্যবর্তী) নির্বাচনে ফলাফল দেরিতে সত্যায়নের পক্ষে মত দিয়েছিলেন অন্তত ২২ কাউন্টির নির্বাচনী কর্মকর্তারা, যা ২০২০ সালের (প্রেসিডেন্ট) নির্বাচনের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।
ওয়াশিংটনের ‘সিটিজেনস ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিকস (সিআরইডব্লিউ)’ নামের একটি সংগঠন বলেছে, সেবার অন্তত ৩৫ জন নির্বাচনী কর্মকর্তা ফলাফল সত্যায়ন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন এবং সম্ভবত পুনরায় নির্বাচন চাইছিলেন। এবার তাঁরা একই কাজ করতে পারেন। সংগঠনটি সতর্ক করে বলেছে, সফল প্রতিবন্ধকতার কারণে অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ভোটের ফলাফল সত্যায়নের তারিখ বদলে যেতে পারে।
আমার বাঙলা/এসএইচ