মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ভূমিকম্প। জার্মানির জিওসায়েন্স ইনস্টিটিউট জিএফজেডের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল সাত দশমিক সাত এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল সাগাইং অঞ্চলে। তবে এর কম্পন মিয়ানমারজুড়ে অনুভূত হওয়ার পাশাপাশি থাইল্যান্ড, চীন ও লাওসেও টের পাওয়া গেছে।
প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে মিয়ানমারের সাগাইং সেতু ধসে পড়েছে। এ ছাড়া মান্দালয়, নেপিদো, পিনমানা, অউংবান ও ইনলে অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ভবন ভেঙে পড়েছে।
ইয়াঙ্গুন-মান্দালয় এক্সপ্রেসওয়ের ওপর অবস্থিত দোথেতাওয়াদি সেতুও ভেঙে গেছে। এ ছাড়া ৩৬২ মাইল দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের বেশ কয়েকটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে কিছু রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রথম ভূমিকম্পের মাত্র ১২ মিনিট পরই আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে মিয়ানমারে।
শক্তিশালী এই কম্পনের পর মিয়ানমারের ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির সরকারি এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের পর আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, দ্বিতীয় ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ছয় দশমিক চার; যা প্রথমটির তুলনায় কম। এর কেন্দ্রস্থল ছিল সাগাইংয়ের দক্ষিণে ১৮ কিলোমিটার দূরে।
এদিকে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার সামরিক জান্তার শাসনে রয়েছে; যা তথ্য প্রবাহে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। দেশটির সরকার প্রায় সব ধরনের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে, যার মধ্যে টেলিভিশন, রেডিও, প্রিন্ট ও অনলাইন মাধ্যম অন্তর্ভুক্ত। ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপরও কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে।
অন্যদিকে মিয়ানমারে তুলনামূলকভাবে ভূমিকম্পের ঘটনা বেশি ঘটে, বিশেষ করে থাইল্যান্ডের তুলনায়। ১৯৩০ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে সাগাইং ফল্ট লাইনের আশপাশে সাত মাত্রার ছয়টি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল।
থাইল্যান্ড ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকা নয় এবং সেখানে যেসব ভূমিকম্প অনুভূত হয়, তার বেশিরভাগই মিয়ানমার থেকে ছড়িয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংককের ভবনগুলো সাধারণত শক্তিশালী ভূমিকম্প সহ্য করার জন্য তৈরি নয়, তাই এই ভূমিকম্পের ফলে সেখানে কাঠামোগত ক্ষতি মারাত্মক হতে পারে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ