ঝিনাইদহের বাগুটিয়া গ্রামে সাজেদুল ওজুদ নামের ব্যক্তির পুকুর থেকে মাছ লুট করার অভিযোগে স্থানীয় নলডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবির হোসেনসহ তার দলবলের সদস্যদের নামে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী মাছ চাষি সাজেদুল ওজুদ বাদী হয়ে অভিযোগটি করেন।
অভিযোগে বলা হয়, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির যুবলীগের আহ্বায়ক ছিলেন। সেই সুবাদে দলের প্রভাব খাটিয়ে সন্ত্রাসীবাহিনী পরিচালনা করতেন। ভয়ে তার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ মুখ খুলতেন না।
অভিযোগে সাজেদুল আরও জানান, উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের বাগুটিয়া মৌজায় তিনি ফিরোজুলের কাছ থেকে ১৪ একর ৩০ শতক ও রোজিনা বেগমের কাছ থেকে তিন একর জমিসহ মোট ১৭ একর ৩০ শতক জমি লিজ নিয়ে, পাঁচটি পুকুরে মাছ চাষ করে আসছিলেন। গত ৩০ জুন ও ২ জুলাই দুই দফায় কবির হোসেন তার পুকুর থেকে মাছ লুট করে এবং প্রায় পাঁচশ কলার কাঁধী নিয়ে যায়
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, বাগুটিয়া গ্রামের তোফোজ্জেল হোসেনের ছেলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ও তার শাগরেদ কুবাদ আলীর ছেলে মুছা মন্ডল, ডালিমের ছেলে রসুল, রেজাউলের ছেলে রাকিব, জামাল হোসেনের ছেলে সুমন, ইমান আলীর ছেলে রিপন, মোজাহার মোল্লার ছেলে মোফাজ্জেল ও ইমরানের ছেলে আশিকসহ ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী দেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনার দিন পুকুর থেকে ১৮ লাখ টাকার মাছ নিয়ে যায়। পুকুরপাড়ে লাগানো প্রায় দুই লাখ টাকার কলা কেটে ফেলে।
সাজেদুল ওজুদ আরও জানান, ঘটনার পরপরই কবির আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় তার নামে মামলা করতে পারেননি। এরপর তিনি ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা করেন।
বাদী আরও অভিযোগ করেন, মামলার প্রধান আসামী কবির হোসেন নলডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তার ভয়ে ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে এখনো ৪০টি পরিবার ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছে। এ ছাড়া মামলা করার পর সাক্ষী দরবেশ জোয়ারদারকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কবির বাহিনী এখনো এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সাবেক চেয়ারম্যান কবির হোসেনর বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতার মামলা রয়েছে।
মাছ লুটের বিষয়ে কবির হোসেন জানান, তিনি এসব বিষয়ের সঙ্গে জড়িত নয়। তা ছাড়া গত ইউপি নির্বাচনে তিনি পরাজিত হওয়ার কারণে তিনি চেয়ারম্যানও ছিলেন না। তিনি দাবি করেন, এলাকায় সামাজিক দ্বন্দ্বের কারণে সাজেদুল ওজুদ মিথ্যা মামলা করেছেন। তিনি পুকুর থেকে মাছ লুট বা কলাগাছ কাটার সঙ্গে জড়িত নন।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বাগুটিয়া গ্রামে মাছ লুটের বিষয়ে আদালত থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা পায়নি। আদালতের আদেশ হাতে পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।