ব্যবসা-বাণিজ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক না রাখলে ভারতই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ভারত তো আমাদের কাছ থেকে বিনা পয়সায় মালামাল দেয় না। পয়সা নিয়েই দেয়। তারা যদি মনে করে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করবে, করুক। তারা গরু বন্ধ করেছে। তাই বলে কি আমরা এখন গরু খাচ্ছি না। ব্যবসা বন্ধ করলে ভারতই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অন্তর্র্বতী সরকারের এই উপদেষ্টা। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মিডিয়া ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে কেন?
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ জড়িত। রাজনৈতিক অবরোধ বিভিন্ন সময়ে দুই পাশেই হয়ে থাকে। এ কারণে দুই-এক দিনের সমস্যা হতে পারে। তবে ভারতের ব্যবসায়ীরা এসব মেনে নেবে না। তারা এই বাজারটাকে নষ্ট করবে না। তাই আমাদের চিন্তা করার কোনো কারণ নেই, ব্যবসা নষ্ট করলে তাদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের কারণে আমাদের থেকে তাদের বেশি ক্ষতি হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে থাকতে চায়। কিন্তু এসব দেখলে তারা ভারতের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যায়। ভারতীয় মিডিয়া গুজব ছড়িয়ে তাদের টিআরপি বাড়াচ্ছে, তবে অন্যদিকে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোই সরকার গঠন করবে। তবে স্বাধীনতার ৫২ বছরে সবগুলো রাজনৈতিক দল কোনো সময়ে এক টেবিলে বসেনি। এই সংকটে সব দল একসঙ্গে বসেছে। এমনকি ধর্মীয় নেতারাও বসেছে। আশা করি আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে তারাও সংকটকালীন সময়ে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ভোমরা স্থলবন্দরে পৌঁছান তিনি। এরপর ভোমরা ইমিগ্রেশন পরিদর্শন করেন। সেখানে ভারত ও বাংলাদেশের পাসপোর্ট যাত্রীদের কোনো হয়রানি হয় কি না, সে বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নেন। পরে তিনি ভোমরা কাস্টমসের যাত্রীদের লাগেজ স্ক্যানার মেশিন, স্থলবন্দরের পণ্য পরিমাপ স্কেলসহ বন্দরের বিভিন্ন সেড পরিদর্শন করেন। এরপর ভোমরা স্থলবন্দরের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ স্থলবন্দর আয়োজিত ভোমরা স্থলবন্দরের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, যশোর বিজিবি সদর দফতরের রিজন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, সাতক্ষীরা ৩৩ ব্যাটালিয়ন বিজিবি'র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশরাফুল হক, ভোমরা কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার আবুল কালাম আজাদ, ভোমরা স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন, ভোমরা সি এন্ডএফ এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু হাসান, সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা, ভোমরা আমদানি রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী প্রমুখ।
আমার বাঙলা/এনবি