নিজস্ব প্রতিবেদক: মহান ভাষা শহীদ দিবসে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণ ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে উঠেছে।
কেউ খোপায় বাহারি ফুল কেউবা কালো পাঞ্জাবি পরে মেলায় প্রবেশ করেছেন। আবার অনেকে সঙ্গে করে মেলায় নিয়ে এসেছেন শিশু-বাচ্চাসহ পুরো পরিবারকে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রতিটি স্টলেই ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়। বড়দের সঙ্গে মেলায় শিশু-কিশোরদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো।
স্কুলপড়ুয়া অনেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া শেষে ভিড় জমিয়েছে বইমেলা প্রাঙ্গণে। তবে মেলায় সবচেয়ে বেশি জমজমাট করে তুলেছেন ভ্রাম্যমাণ বই বিক্রেতা টিপু সুলতান। তিনি ফেরি করে বিক্রির পাশাপাশি বইপ্রেমীদের নিয়ে জমিয়েছেন আসর। দিচ্ছেন তার লেখা বই নিয়ে বক্তব্য।
মেলায় আসা ইয়াসমিন অর্থি বলেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলায় এসেছি। আজ সরকারি ছুটি থাকায় রাস্তাঘাটে জ্যাম কম। তাছাড়া সবাইকে নিয়ে একসাথে মেলায় আসার সময়ও কম পাওয়া যায়।
অর্থি আরও বলেন, আমি প্রধানত তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের বই পড়তে বেশি পছন্দ করি। কিন্তু এ জাতীয় বই প্রকাশ করা কয়েকটি প্রকাশনীর স্টল বইমেলায় নেই। তবে আরিফ আজাদ ও ড. শামসুল আরেফিনের দুইটা বই অনেক খোঁজাখুঁজির পরে কিনতে পেরেছি।
মেলায় আসা ইশান বড়ুয়া বলেন, সকালে বন্ধুরা মিলে এসেছিলাম শহীদ মিনারে ফুল দিতে। পরে সবাই প্ল্যান করে বইমেলায় এসেছি। অনেক স্টল ঘুরে দেখেছি কিন্তু কোনো বই এখনো কেনা হয়নি। পছন্দের বই অনেক থাকলেও প্রতিটি বইয়ের দাম অনেক।
শুভ্র দেবনাথ নামে আরেকজন বলেন, বইমেলায় এসে ভালো লাগছে। আমি সময় পেলেই মেলায় ঢুঁ মেরে দেখি। আজ বিকেলে বেশি ভিড় হবে। তবে সকাল থেকেই এত মানুষের ভিড় দেখে ভালোই লাগছে।
চারুলিপি প্রকাশনীর ম্যানেজার মাসুম পারভেজ বলেন, মেলায় দর্শনার্থী অনেক কিন্তু ক্রেতা কম। অনেকেই আসছেন বই দেখছেন, পড়ছেন, ছবি তুলছেন কিন্তু আলটিমেটলি কিনছেন না। এটা আমাদের জন্য তো দুঃখজনক বটেই, পাশাপাশি লেখক এবং সংশ্লিষ্টদের জন্যও নেতিবাচক একটা বার্তা।
আমি আশা করব শুধু দেখা বা ছবি তোলার মাঝে সীমাবদ্ধ না থেকে বই কিনুন, বই পড়ুন, প্রিয়জনকে বই উপহার দিন। পৃথিবীটা হোক বইয়ের।
আদী প্রকাশনীর বিক্রেতা ইউসুফ খান বলেন, সকাল থেকেই আজ (বুধবার) মানুষের বেশ ভিড়। তবে বিকেলে এই ভিড় আরও বাড়তে পারে। কিন্তু বিক্রি অনেক কম। মানুষ এখন আর বই পড়ে না। সবাই মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকেন। বই পড়ার সময় কোথায়।
এবি/এইচএন