ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও সংলগ্ন এলাকা জুড়ে অবৈধ থ্রি-হুইলার ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা, সিএনজি ও ভ্যানের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলে সৃষ্টি হয়েছে চরম যানজট ও নিরাপত্তাহীনতা। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এসব যানবাহন প্রতিদিন মহাসড়ক ও শাখা সড়কগুলোতে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে, যা থেকে ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পথচারী ও বড় যানবাহনের চালকরাও এ পরিস্থিতিতে নাকাল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, থানা মোড়, পল্লী বিদ্যুৎ মোড়, সরকারি কলেজ এলাকা, ভরাডোবা ইউনিয়নের নতুন-পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, হাজির বাজার, মায়ের মসজিদ, আইডিয়াল মোড়সহ প্রায় অর্ধশতাধিক পয়েন্টে অবৈধ যানবাহন গুলোর দাপট। এসব যান চালকদের অধিকাংশের নেই বৈধ লাইসেন্স বা প্রশিক্ষণ। উল্টো দিকে চলাচল, যাত্রী ওঠা নামার জন্য যেকোনো স্থানে জরুরি স্টপ, এবং যানবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
ভালুকা পৌরসভার বাসিন্দা আলিফ সরকার (২৮) বলেন, "মহাসড়কের প্রতিটি মোড়ে অটো রিক্সা গুলো উল্টো দিকে ছুটে আসে। পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই। স্কুল-কলেজের সামনে যানজটে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত আটকে থাকে।" ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের ট্রাক চালক হুমায়ুন (৫০) অভিযোগ করেন, "অটো চালকরা ট্রাকের সামনে লাইন ছেড়ে দেয় না। ব্রেক ফেললে ধাক্কা লাগবেই। গত মাসে এমন দুর্ঘটনায় আমার গাড়ির সামনে পড়ে একজনের পা ভেঙেছিল।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় নাগরিক জানান, অবৈধ অটোরিক্সা চালকদের একটি বড় অংশ ভাসমান মানুষ, যারা মাদক পাচার, চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে জড়িত। "গত বছর মাষ্টারবাড়ী এলাকায় অটো চালকের ছদ্মবেশে দুই যুবককে ছিনতাই করে হত্যা করা হয়। এমন অনেক ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে যায়," বলেন এক শিক্ষক।
ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে খ্রী-হুইলার, সিএনজি, অটো-রিক্সার সংখ্যা বেশি হওয়ায় তাদের লাগাম টানা কঠিন হচ্ছে। তার পরেও গত ২ মাসে ৬শ এর অধীক অটো জব্দ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।" তিনি আরও যোগ করেন, "মহাসড়কে টহল বাড়ানো হয়েছে। এনফোর্সমেন্টের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম ও চলছে।"
আমারবাঙলা/ইউকে